ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ঘটনায় আটক ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশ এখন খুঁজছে ওই বিক্ষোভ আহ্বানকারী ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আসার এক দিন আগে আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে মতিঝিলে বিক্ষোভ হয় নুরের নেতৃত্বে। পুলিশ বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষও বাধে।
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়ে শিশুবক্তা হিসেবে পরিচিত রফিকুলসহ ৩৩ জনকে সেখান থেকে আটকের কথা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম দুপুরে প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন।
তবে কয়েক ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রফিকুলকে ছেড়ে দেওয়া হয়। যোগাযোগ করা হলে পুলিশ কর্মকর্তা নুরুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘর্ষ ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছিল। তবে বিকেলে রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আটক আছেন ৩২ জন।’
রফিকুল আটকের পর প্রিজন ভ্যানে বসে ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেন। অল্প সময়ের মধ্যে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার মুক্তি চেয়ে বিবৃতিও দেয় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জেহাদি।
পুলিশের ওপর হামলার নেতৃত্বে নুর ছিলেন দাবি করে পুলিশ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা হবে।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নুরুল হকের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার ছাত্রসংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি ফাতিমা তাসনিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মতিঝিল এলাকায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম। কোনো রকম উসকানি ছাড়াই পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে, মারধর করে, রবার বুলেট ছোড়ে।’
পুলিশের মারধরে নুরুল হকসহ তাঁদের দলের ৪০ থেকে ৫০ জন আহত হয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এঁদের মধ্যে কয়েকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা চিকিৎসা নিচ্ছেন গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে।
মতিঝিল থেকে আটক আবুল কালাম নামে একজনকে পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়েছিল চিকিৎসার জন্য। সেখানে এসআই রায়হানকে মারধর করে নুরের সহযোগীরা তাঁকে ছিনিয়ে নেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। বেলা ৩টার দিকে ঘটনাটি ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শী লোকজন জানিয়েছেন।