বরগুনা পলিটেকনিক

শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার-আতঙ্কে শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থা

পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলায় গ্রেপ্তার-আতঙ্কে শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষা কার্যক্রমে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২০ দিন ধরে চলা অচলাবস্থার ফলে ইনস্টিটিউটের প্রায় ৯০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনে গভীর অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, কয়েকজন ছাত্রীকে যৌন হয়রানি ও টিউটোরিয়ালে পাস করিয়ে দেওয়ার জন্য ঘুষ আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ জে এম মাসুদুর রহমানের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীরা গত ১ জুন থেকে আন্দোলন শুরু করেন। ১৯ জুন বরগুনা-মঠবাড়িয়া-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) পাঁচজন পুলিশ ও অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এই ঘটনায় পুলিশ বরগুনা থানায় দ্রুত বিচার আইনে ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে পৃথক দুটি মামলা করে। উভয় মামলায় ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫০-৬০ জনকে। পুলিশ ১৩ জন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ওই ঘটনার পর থেকে অনেক শিক্ষার্থী গা ঢাকা দেন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার-আতঙ্কে ইনস্টিটিউটে আসা বন্ধ করে দেন। ফলে নিয়মিত ক্লাসগুলো হচ্ছে না। এমনকি অর্ধ-সেমিস্টার পরীক্ষাও নেওয়া যাচ্ছে না। ২০ দিন ধরে এই অচলাবস্থা চলছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সাধারণ ছাত্রদের অংশগ্রহণ ছিল খুব কম। শিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি-সম্পাদকসহ অন্য নেতা-কর্মীরা আগে থেকেই সেখানে লাঠিসোঁটা ও ইট মজুত করে রাখেন এবং শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে হামলা করেন। কিন্তু মামলায় আসামি করা হয়েছে নিরীহ শিক্ষার্থীদের।
বরগুনা থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, শিবিরের কলেজ শাখার নেতা-কর্মীরা ওই হামলার মূল ভূমিকা পালন করেছেন, সেটা নিশ্চত হয়ে ২ জুলাই শিবিরের পলিটেকনিক শাখার সভাপতি নূরে আলমকে আটক করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
বরগুনা থানার ওসি পুলক চন্দ্র রায় বলেন, কোনো নিরীহ শিক্ষার্থী যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে ব্যাপারে পুলিশ নজর রাখছে।
নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ মো. মাইনুল হাসান বলেন, যোগদান করার পর মামলার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, কোনো নিরীহ শিক্ষার্থীকে এ মামলায় হয়রানি করা হবে না।