পাঁচ শর্তে শিক্ষার্থীদের বাসভাড়া অর্ধেক করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। দেশের সব মহানগরে (মেট্রোপলিটন এলাকায়) এ ভাড়া কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ হয়।
১৯ নভেম্বর থেকে মূলত ঢাকার শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনে হাফ ভাড়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
ডিজেলের দাম গত ৪ নভেম্বর ২৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। এরপরই পরিবহনমালিকদের চাপে সরকার বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। আর এর পর থেকেই বাসে অর্ধেক ভাড়া দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। মূলত ঢাকা মহানগরেই এ আন্দোলন শুরু হয়। পরে তা দেশের অন্য শহরে ছড়িয়ে পড়ে। ২৪ নভেম্বর ঢাকায় সিটি করপোরেশনের গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর সেই আন্দোলন আরও গতি পায়। পরদিনই বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সের উল্টো দিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ময়লার গাড়ির চাপায় প্রাণ হারান আহসান কবির খান।
শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে প্রথমে বিআরটিসির বাসে এবং পরে ৩০ নভেম্বর পরিবহনমালিকেরা ঢাকার বাসভাড়া অর্ধেক করার ঘোষণা দেন। শিক্ষার্থীদের ১১ দফা আন্দোলনের একটি শর্ত ছিল সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে হাফ ভাড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এই প্রজ্ঞাপন জারি হলো।
গতকালের প্রজ্ঞাপনে যে পাঁচ শর্ত দেওয়া হয় সেগুলো হলো, এখন যে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, তার ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক কম ভাড়া দিতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় শর্ত, ভ্রমণকালে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইস্যু করা ছবিযুক্ত হালনাগাদ বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে এবং তা প্রয়োজনে দেখাতে হবে। তৃতীয় শর্ত, সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বেসরকারি বাসে চলাচলের ক্ষেত্রে এ হাফ ভাড়ার সুযোগ মিলবে। চতুর্থ শর্ত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটির দিনে এ হাফ ভাড়া প্রযোজ্য হবে না। পঞ্চম ও শেষ শর্ত হলো, দূরপাল্লার বাসে এ হাফ ভাড়া প্রযোজ্য হবে না।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিনের স্বাক্ষর করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১ ডিসেম্বর থেকে ঢাকা মহানগরে এবং ১১ ডিসেম্বর থেকে অন্যান্য মহানগরে এ ভাড়া কার্যকর বলে ধরা হবে।