শহরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কিশোর-কিশোরীর সংখ্যাও বাড়ছে। এসব কিশোর-কিশোরীর স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি। এদের বড় একটি অংশ তথ্য ও স্বাস্থ্যসেবা পায় না। এদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজের সমন্বয় বাড়ানো দরকার।
গতকাল শনিবার প্রথম আলো কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘শহরকেন্দ্রিক কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা এ কথা বলেন। প্রথম আলো এ বৈঠকের আয়োজন করে। সহায়তা করেছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)।
গোলটেবিল বৈঠকে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকারের তালিকার শীর্ষে থাকা বিষয়গুলোর অন্যতম হচ্ছে স্বাস্থ্য। নতুন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছেলে–মেয়েনির্বিশেষে সবার জন্য মানসম্পন্ন টয়লেট রাখার ব্যাপারে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। পাঠ্যসূচিতে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে থাকা উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সরকারের অর্থের কোনো অভাব হবে না। তাদের জন্য নেওয়া প্রকল্পে সঠিকভাবে অর্থ ব্যয় হচ্ছে কি না, তা তুলে ধরতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
>অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষার বিষয়ে সরকার নতুন উপকরণ তৈরি করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, যেসব কিশোর-কিশোরী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে যায় না, সরকারের উচিত তাদের কাছে শিক্ষা বা স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া। প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষা উপকরণগুলো এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন তা কিশোর-কিশোরীদের কাছে আনন্দময় হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম। আলোচনায় অংশ নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ ছিল না বলে কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রচারপত্র ব্যবহার করা যায়নি বা পাঠ্যপুস্তকে থাকলেও শিক্ষার্থীদের পড়ানো সম্ভব হয়নি। সরকার অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে সাদামাটা নতুন উপকরণ তৈরি করেছে এবং ৩৫০টি স্কুলে তার ব্যবহারও শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশবান্ধব স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহের ব্যাপারে সরকারের সক্রিয় উদ্যোগ আছে।
অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য কর্মসূচি) মোহাম্মদ শরীফ বলেন, রাজধানীতে আজিমপুর মাতৃস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও মোহাম্মদপুর পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে কিশোর-কিশোরীদের পরামর্শ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার পৃথক ব্যবস্থা আছে। রাজধানীর প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে এ ধরনের কেন্দ্র খোলার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে তিনি অনুরোধ করেন।