সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীরা লুপাসে বেশি আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের লুপাসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি।
লুপাস একধরনের দীর্ঘমেয়াদি বাতরোগ। এতে আক্রান্ত হলে শরীরের বিভিন্ন কোষ ও অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। অনেক সময় এ রোগ দেরিতে ধরা পড়ে। শরীরে নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। বিশ্বজুড়ে ৫০ লাখের বেশি মানুষ লুপাসে আক্রান্ত। তবে অনেকেই রোগটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না। ফলে উপসর্গ থাকলেও রোগ শনাক্তে বিলম্ব হয়। তাই লুপাস সম্পর্কে জানতে হবে, সচেতন হতে হবে।
সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীরা লুপাসে বেশি আক্রান্ত হন। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের লুপাসে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। লুপাসের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বল্পতা রয়েছে। একদিকে রোগ সম্পর্কে অজ্ঞতা, অন্যদিকে চিকিৎসকের স্বল্পতা—এ দুই কারণে লুপাস শনাক্ত হওয়ার আগে রোগীর জটিলতা বেড়ে যায়। এমনকি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ক্ষতি হয়।
সচরাচর লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া ও শনাক্তের মধ্যে ৩ থেকে ৬ বছর সময় নষ্ট হয়। বিশ্ব লুপাস ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, লুপাসে আক্রান্ত ৮৭ শতাংশ রোগীর শরীরের যেকোনো একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুই–তৃতীয়াংশ রোগীর একাধিক অঙ্গে ক্ষতি হয়। ৬০ শতাংশ রোগীর ত্বক, ৪৫ শতাংশের হাড়-পেশি-সন্ধি এবং ৩৬ শতাংশের কিডনির ক্ষতি হয়।
উপসর্গ
● নাক থেকে গালের দুই পাশ পর্যন্ত লাল দানা বা র্যাশ।
● ত্বকে লাল লাল গোল চাকা দেখা দেওয়া। সূর্যের আলোর প্রতি সংবেদনশীল ত্বক।
● দীর্ঘমেয়াদে গিরা ব্যথা বা ফোলা।
● মুখের তালুতে ব্যথাহীন ও দীর্ঘমেয়াদি ঘা থাকা।
● শীতের সময় হাতের আঙুলের রং বদলে যাওয়া।
● দীর্ঘমেয়াদি ক্লান্তিভাব। চোখ, মুখ কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে যাওয়া।
● লালচে ও ফেনাযুক্ত প্রস্রাব হওয়া।
● রক্তশূন্যতা; রক্তে শ্বেতকণিকা কিংবা অনুচক্রিকার সংখ্যা কমে যাওয়া।
● খিঁচুনি, হাত–পা অবশ হওয়া, মাংসপেশির দুর্বলতা।
● ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড কিংবা পেটে পানি আসা।
ওপরে উল্লেখ করা উপসর্গ দেখা দিলে, বিশেষত নারীদের, দ্রুত একজন বাতরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। লুপাস শনাক্তের জন্য প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা–নিরীক্ষা করাতে হবে। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে অনেক জটিলতা এড়ানো যায় এবং লুপাস নিয়েই স্বাভাবিক জীবন যাপন করা সম্ভব।
মেডিসিন ও রিউমাটোলজি বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ, ঢাকা