লাইসেন্সবিহীন চালকের মুখে ইঞ্জিন অয়েল

সদ্য পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের প্রতিবাদে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-পোস্তগোলা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন। শ্রমিকেরা সড়কে চলাচল করা গাড়ি থামিয়ে চালকদের লাইসেন্স পরীক্ষা করছেন। যেসব চালকের লাইসেন্স নেই, তাঁদের নাকে–মুখে পোড়া ইঞ্জিন অয়েল মেখে দিচ্ছেন তাঁরা। যাঁদের কাছে বৈধ লাইসেন্স পাওয়া যাচ্ছে, তাঁদের গাড়ি চালানো বন্ধ করে আন্দোলনে নামার জন্য বলপ্রয়োগ করা হচ্ছে। আজ রাজধানীর পশ্চিম ধোলাইরপাড় এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

এক চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল। ছবি: দীপু মালাকার
এক চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল। ছবি: দীপু মালাকার

সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া সড়ক পরিবহন আইনের প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ আজ থেকে সারা দেশে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

নতুন সড়ক পরিবহন আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় অপরাধ প্রমাণ হওয়া সাপেক্ষে একজন চালকের সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া এই আইনে সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যু হলে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আছে। সে ক্ষেত্রে অপরাধীর সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড।

লাইসেন্স না থাকায় চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল মাখানো হচ্ছে। ছবি: দীপু মালাকার

পশ্চিম ধোলাইরপাড় এলাকায় আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ট্রাক-লরি-কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. এরশাদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনে মৃত্যুদণ্ড আর পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান আছে। এই বিধান মাথায় নিয়ে আমরা গাড়ি চালাব কী করে? এই আইন বাতিল করতে হবে। বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) দীন ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকেরা যা করছেন, সেটা তাঁরা করতে পারেন না। কারও মুখে রং লাগানো বা লাইসেন্স চেক করে সেই লাইসেন্স নিজদের কাছে রাখার আইনি অধিকার তাঁদের নেই। ব্যাপারটি তাঁদের বলা হয়েছে। শ্রমিকনেতাদের বলা হয়েছে, তাঁরা বিষয়টি দেখছেন বলে জানিয়েছেন।

লাইসেন্স না থাকায় চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল মাখানো হচ্ছে। ছবি: দীপু মালাকার

দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১০০ ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান সেখানে আটকে রেখেছেন শ্রমিকেরা। এসব যানবাহনের চালকের লাইসেন্স তাঁরা রেখে দিয়েছেন।

এসআই দীন ইসলাম বলেন, যিনি লাইসেন্স রাখছেন, তাঁদের তথ্য পুলিশ রেখেছে। শিগগিরই প্রত্যেকের লাইসেন্স ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।