লবণের দাম বাড়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ায় মাঠে নেমেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করায় আদালত জরিমানার পাশাপাশি দণ্ড দিয়েছেন। গুজব রটনাকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন আদালত।
প্রথম আলোর বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
চট্টগ্রাম: চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌর সদরে লবণের দাম বৃদ্ধির ‘গুজব’ ছড়িয়ে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করার দায়ে চারটি দোকানের মালিককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার রাত ১০টায় চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আ ন ম বদরুদোজ্জা এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। তিনি বলেন, লবণের কেজি দু শ টাকা হবে—হঠাৎ করে এ ধরনের ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে। গুজবের কারণে বিভিন্ন দোকানে লবণ কিনতে ভিড় করেন গ্রামের সাধারণ মানুষ। খবর পেয়ে দোহাজারী পৌর সদর এলাকায় গিয়ে কয়েকটি দোকানে ৫০–৬০ টাকা করে লবণ বিক্রির প্রমাণ পাওয়া যায়। এতে এসব দোকানের প্রতি মালিককে পাঁচ হাজার টাকা করে চারটি দোকানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জামালপুর: লবণের দাম বাড়ার গুজব ছড়ানোর অপরাধে জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে গত মঙ্গলবার রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত চার তরুণকে তিন দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, লবণের দাম বাড়ার গুজব ছড়ায় পৌর শহরের আরামনগর বাজারে গত মঙ্গলবার ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। লবণের দাম বাড়ার গুজব ছড়ানোর অপরাধে রাতে পৌর শহরের সামর্থবাড়ির রায়হান কবীর (২০), সাঞ্চারপাড় গ্রামের আকাশ (১৮), ছাতারিয়া গ্রামের শামীম মিয়া (১৮) ও চর বালিয়া গ্রামের সাগর রানাকে (১৮ আটক করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শিহাব উদ্দিন আহমদ সরিষাবাড়ী থানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
রাজশাহী: বাগমারায় গুজব ছড়িয়ে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রির ঘটনায় ছয়জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। দণ্ড পাওয়া লবণ বিক্রেতারা হলেন উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মনিরুজ্জামান (৩০), চেউখালী গ্রামের আবদুস সামাদ (৫৩), বাগমারা গ্রামের রইচ উদ্দিন (৩৯), আশরাফুল ইসলাম (২৫), সাঁকোয়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম (৩৫) ও মাদিলা গ্রামের সাইদুর রহমান (৪০)।
প্রত্যেককে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় তাহেরপুর বাজারের নিতাই কুণ্ডু নামের এক যুবককে পুলিশ আটক করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার পর পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন মাইকে প্রচার চালিয়ে গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান। এ সময় অভিযানও চালানো হয়। পুলিশ ক্রেতা সেজে অতিরিক্ত দাম নেওয়াতে তিনজনকে এবং উপজেলা প্রশাসন আরও তিনজনকে হাতে নাতে আটক করে। পরে রাত সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আটক ছয় লবণ বিক্রেতাকে এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। আজ বুধবার সকালে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।