লক্ষ্মীপুরে প্রথম করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসে আরও ১২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসক, তিনজন স্বাস্থ্যকর্মী ও বাকিরা তাঁর আত্মীয়স্বজন। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের নমুনা পরীক্ষার ফল আসে।
প্রথম আক্রান্ত ব্যক্তি ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে নিজের বাড়িতে আসেন। তাঁর বয়স ৩২ বছর। পরদিন শরীরের ব্যথা নিয়ে রামগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান তিনি। চিকিৎসক তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। করোনার কোনো উপসর্গ না থাকলেও তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১১ এপ্রিল জানা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত। এরপর তাঁর সংস্পর্শে আসা স্বজন ও চিকিৎসকসহ ৩৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। তাঁদের মধ্যে ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসচিব গুণময় পোদ্দার জানান, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে ইউনিটে রাখা হয়েছে। অন্যদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। ওই যুবকের সংস্পর্শে আসা আরও কিছু লোকের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে এক দিনেই ১৭ জন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রামগঞ্জেই ১৩ জন। আর তিনজন কমলনগর ও একজন সদর উপজেলায়। এ নিয়ে লক্ষ্মীপুরে মোট ১৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।
গত সোমবার সকাল ছয়টা থেকে লক্ষ্মীপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করে জেলা প্রশাসন।
স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের চারজন কর্মকর্তার ভাষ্যমতে, সামাজিক দূরত্ব মানছে না লোকজন। এ জন্য লক্ষ্মীপুর এখন ঝুঁকিপূর্ণ। তা ছাড়া, লকডাউন হলেও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী গাড়ি এবং ট্রলারে করে কৌশলে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে লোকজন লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। গত ১০ দিনে দেড় শতাধিক ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ থেকে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৫০ জনকে খুঁজে বের করে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অনেকেই পাড়া-মহল্লায়, হাটবাজারে অবাধে বিচরণ করছেন। এতে আতঙ্ক বাড়ছে পুরো জেলায়। জেলার রামগঞ্জ ও রামগতিতে দুই ব্যক্তির করোনা শনাক্ত হয়েছে, যাঁরা নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছেন। তাঁরাই জেলার প্রথম ও দ্বিতীয় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। এ ছাড়া বিদেশ থেকে প্রায় চার হাজার প্রবাসী এসেছেন গত এক মাসে।