প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আগামী ১৫ জুলাই দিন ঠিক করেছেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম এই আদেশ দেন।
এর আগে আজ মঙ্গলবার সকালে রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনও নাকচ করেন আদালত। সরকারি গোপন তথ্য চুরির অভিযোগে দণ্ডবিধি ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলায় রোজিনা ইসলামকে আদালতে হাজির করে পাঁচ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে শাহবাগ থানা-পুলিশ। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের বিরোধিতা করে তাঁকে জামিন দেওয়ার আবেদন জানান।
আদালত রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য শুনে রোজিনা ইসলামকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আর রোজিনা ইসলামের জামিনের আবেদনের ওপর আগামী বৃহস্পতিবার অধিকতর শুনানি গ্রহণ করবেন বলে আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
শুনানিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী আদালতকে বলেন, রোজিনা ইসলাম একজন নারী। তাঁর সঙ্গে অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে তাঁর সঙ্গে অগণতান্ত্রিক আচরণ করা হয়েছে।
অবশ্য রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু আদালতকে বলেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সরকারি গোপন তথ্য চুরি করে অপরাধ করেছেন।
সোমবার রাতভর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানায় আটক রাখার পর সকাল আটার দিকে তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনে পুলিশ।
হাজতখানায় তিন ঘণ্টা রাখার পর বেলা ১১টার দিকে তাঁকে কড়া পুলিশ প্রহরায় আদালতের এজলাসকক্ষে তোলা হয়। এজলাসকক্ষে দুই পক্ষের আইনজীবীরা থাকলেও অধিকাংশ গণমাধ্যমকর্মীকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রোজিনা ইসলাম বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ হচ্ছে।’
পরে বেলা ১টার দিকে রোজিনা ইসলামকে প্রিজন ভ্যানে করে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষ থেকে সরকারি গোপন তথ্য চুরি এবং মুঠোফোনে ছবি ধারণ করার অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রাখা হয়। রাত আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে শাহবাগ থানায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১ এবং অফিশিয়াল সিক্রেক্টস অ্যাক্টের ৩ ও ৫ ধারার অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী।