ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় গর্ত–আতঙ্কে শিক্ষার্থীশূন্য মধ্য ঘনিমহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে বিপাকে পড়েছেন অভিভাবকসহ এলাকাবাসী।
২০০২ সালে স্থাপিত হয় মধ্য ঘনিমহেশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এরপর সরকারের সিদ্ধান্তে জাতীয়করণ হয়। শুরু থেকে একটি জরাজীর্ণ বাঁশের বেড়ার টিন শেড ঘরে নিয়মিত ক্লাস ও অফিসে যাবতীয় কার্যাদি পরিচালিত হয়ে এলেও চলতি অর্থবছরের মার্চে একটি ভবন নির্মাণ বাবদ ৬৯ লাখ ৮২ হাজার ৭৭৮ টাকা সরকারি বরাদ্দ পায় স্কুলটি। ভবন নির্মাণের কাজটি পান ঠাকুরগাঁওয়ের ঠিকাদার আবদুল্লাহ। ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেন ঠিকাদারের লোকজন। নির্মাণাধীন ভবনের ভিটে ভরাটের উদ্দেশ্যে স্কুলের অবশিষ্ট জমিতে একটি বড় গর্ত তৈরি করে মাটি উত্তোলন করা হয়। গর্তটি বর্তমানে স্কুলের কোমলমতি শিশুদের মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে বলে অভিভাবকসহ স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করছেনন।
গত ২২ জুন স্কুলে এক অভিভাবক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অভিভাবকেরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে সাফ জানিয়ে দেন গর্তটি ভরাট না করা পর্যন্ত তাঁদের শিশুদের আর স্কুলে পাঠাবেন না। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিশু শিক্ষার্থীরা সেদিন থেকে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। ফলে স্কুলটি শিক্ষার্থী শূন্যতায় পরিণত হয়।
কথা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাবেকুন নাহারের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে ঠিকাদারের লোকজন গত রমজান মাসের ছুটিতে স্কুলের জমিতে একটি গর্ত করে ভবনের ভিটে ভরাট করেন। আমি বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রকৌশলী নুরুজ্জামান সরদার মোবাইলে বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দিলে ঠিকাদার ওই কাজটি করার সুযোগ পেতেন না। স্কুল কর্তৃপক্ষ স্কুলের জমিতে গর্ত করার অনুমতি কেন দিলেন—এ প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি।
ঠিকাদার আবদুল্লাহ মোবাইলে বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই আমরা কাজটি করেছি।’
স্কুল কমিটির সভাপতি হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি স্কুলের জমিতে অল্প মাটি কাটার অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু এত বড় গর্ত হবে এটা ভাবিনি। বর্তমানে আমি কমিটিসহ স্থানীয় অভিভাবকদের চাপে রয়েছি।’
এ ব্যাপারে মোবাইলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, ‘স্কুলের বিষয়টি আমি এখনই দেখছি। সমাধান হয়ে যাবে।’
*মো. জাহাঙ্গীর আলম, রুহিয়া, ঠাকুরগাঁও