গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সৃষ্টি হওয়া যানজটের প্রভাব আজ শনিবারও পড়ে রাজধানী ঢাকা ও তার আশপাশের সড়কে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক ভোগান্তি সৃষ্টি হয় সাধারণ যাত্রী ও পথচারীদের।
ট্রাফিক পুলিশ ও যানবাহনের চালকদের ভাষ্যমতে, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এয়ারপোর্ট থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত চলছে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজ করতে গিয়ে সড়কে তৈরি করে রাখা হয়েছে গর্ত, ফেলে রাখা হয়েছে বালু, মাটিসহ বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী। পুরো সড়কই এখন খানাখন্দে ভরা। এসব কারণে যানবাহন চলাচল করতে না পেরে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। এর মাঝে আজও সকাল থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়ে তা ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীতে। এতেই সৃষ্টি হয় ব্যাপক ভোগান্তির।
রাজধানীর আবদুল্লাহপুর, কামাড়পাড়া, আজমপুর, এয়ারপোর্ট ও খিলখেত এলাকার দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল থেকেই গাজীপুরে সৃষ্টি হওয়া যানজটের জের চলে যায় রাজধানীর মহাখালী পর্যন্ত। এর মধ্যে আবদুল্লাহপুর থেকে প্রায় বনানী পর্যন্ত সড়কজুড়েই ছিল যানজট। সকাল থেকেই যানবাহনগুলো চলাচল করছিল খুবই ধীরগতিতে, থেমে থেমে। এতে বাসের যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে বাস থেকে নেমে হেঁটেই রওনা দেন গন্তব্যে।
খিলখেত পুলিশ বক্সের পরিদর্শক মো. নুরুন নবী বলেন, ‘আমরা সেই সকাল থেকেই চেষ্টা করছি যানবাহনগুলোর গতি ধরে রাখতে। কিন্তু সামনের (গাজীপুর) লাইন পরিষ্কার না থাকায় কোনোভাবেই তা পারছি না। এসব কারণে যানবাহনগুলো চলছে খুব ধীরগতিতে। মাঝে কিছু সময়ের জন্য গাড়ির গতি বাড়লেও মুহূর্তেই তা থেমে যাচ্ছে। এ কারণে যাত্রীরা পড়ছেন ভোগান্তিতে।’
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির আবদুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত পুরো সড়ক কাটা। কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা টঙ্গী বাজার থেকে গাজীপুরা পর্যন্ত। এটুকো সড়কের পুরোটা জুড়েই গর্ত, ভাঙা। এসব গর্ত বা ভাঙা জায়গায় জমে আছে হাঁটুপানি। গর্তে পড়ার ভয়ে কোনো যানবাহন এগোতে পারছে না। ফলে যানবাহনের জট তৈরি হয়ে ঠেকেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। এসব কারণে ঢাকা-সিরাজগঞ্জ সড়ক ও ঢাকা-সিলেট সড়কেও দেখা দিয়েছে যানজট। এর মাঝে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ভোগান্তি আরও বাড়ে যাত্রীদের।
কর্মস্থল গাজীপুরের টঙ্গীর বিসিক এলাকার উদ্দেশে বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন মো. মেহেদি হাসান। তিনি টঙ্গীর একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা। সকাল সাড়ে আটটায় খিলখেত এলাকা থেকে একটি বাসে ওঠেন তিনি। এরপর জ্যাম ঠেলে দুপুর ১২টার দিকে পৌঁছেন টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায়। এর মধ্যে কিছুটা পথ হাঁটতেও হয়েছে তাঁকে। এতেও পড়তে হয়েছে বৃষ্টি ও কাদার বিড়ম্বনায়।
কথা হলে তিনি বলেন, ‘বেলা ১১টায় একটি জরুরি মিটিং ছিল। কিন্তু যানজটে তা করতে পারিনি। বাস থেকে নেমে হেঁটেও চেষ্টা করছি। কিন্তু কাদা, গর্তের কারণে হাঁটাও যায় না। এরপর বাধ্য হয়ে একটি চায়ের দোকানে বসে বিশ্রাম নিচ্ছি।’ চাকরিতে কোনো সমস্যা হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইদানীং প্রায়ই এমন লেট হচ্ছে। এটা নিয়ে স্যাররা আমার ওপর বিরক্ত। কিন্তু রাস্তায় সমস্যা থাকলে আমি করব।’