আলপনায় বৈশাখ

রঙে রঙে রঙিন হলো জনপথ

রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এয়ারটেল-প্রথম আলো আয়োজিত আলপনায় বৈশাখ ছবি:সাহাদত পারভেজ
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এয়ারটেল-প্রথম আলো আয়োজিত আলপনায় বৈশাখ ছবি:সাহাদত পারভেজ

লালমাটিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সানজিদা হকের স্বপ্ন একটি রঙিন বাংলাদেশের। যেখানে মানুষের মন থাকবে আনন্দে ভরা, দুঃখ-কষ্ট তাদের স্পর্শ করবে না। সেই রং কেমন হবে জানতে চাইলে চটপট উত্তর, ‘আলপনার মতো রঙিন হতে পারে।’
রাত সাড়ে ১২টার দিকে সানজিদার সঙ্গে কথা হচ্ছিল জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজাসংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ‘এয়ারটেল-প্রথম আলো আলপনায় বৈশাখ ১৪২১’ শীর্ষক বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। বন্ধুদের সঙ্গে এক নম্বর ন্যাম ভবনের সামনের ফুটপাতে বসে গান করছিলেন। জানালেন, রংতুলির আঁচড়ে নতুন বছরকে রাঙাতে এসেছেন তাঁরা। কিছুক্ষণ আগেই তাঁরা ঘণ্টা খানেক রংতুলি দিয়ে আলপনা এঁকেছেন।
সানজিদা হক এবং তাঁর বন্ধুদের মতো হাজারো তরুণ-তরুণী গত রোববার রাতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে এসেছিলেন নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে। সারা রাত ধরে তাঁরা অ্যাভিনিউর দুই পাশের সড়কে আলপনা এঁকেছেন। তিন লাখ ২৬ হাজার বর্গফুটের এই আলপনায় তরুণদের পাশাপাশি শিশু ও বয়স্কদের অংশগ্রহণও ছিল চোখে পড়ার মতো। নতুন বছরের সূর্যোদয় হওয়া পর্যন্ত চলা এই বিরাট কর্মযজ্ঞে চিত্রশিল্পীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার আবালবৃদ্ধবনিতা। একদিকে আলপনা আঁকা, অন্যদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মাতিয়ে রাখে আগত দর্শনার্থীদের। এয়ারটেলের কর্মকর্তা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা এবং প্রথম আলোর বন্ধুসভার সদস্যরা রাতভর এই অঙ্কনকাজে উপস্থিত ছিলেন।
অপেশাদার ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাহীন আলপনা আঁকিয়েদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে কথা বলেছেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী, সমরজিৎ রায়চৌধুরী, মনিরুজ্জামান, অশোক কর্মকারের মতো চিত্রশিল্পীরা। কাউকে কাউকে তুলি ধরার পদ্ধতিও শিখিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
রাত ১২টার দিকে ব্যান্ড জলের গান গেয়ে ওঠে ‘ঝড় আঁকতে পারি না তবু ঝড় বয়ে যায়’ গানটি। এর আগে হিমাদ্রী শেখর ও সিমুদের গাওয়া গানের মধ্য দিয়ে ১৪২০ সালকে বিদায় এবং ১৪২১ সালকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর গান করেন কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, বাপ্পা মজুমদার প্রমুখ। নৃত্যাঞ্চলের শিল্পীদের নাচের তালে নেচেছেন আগতরাও।
এয়ারটেল ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করেছে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। আয়োজন বাস্তবায়নে কাজ করেছে এশিয়াটিক ৩৬০ মার্কেটিং কমিউনিকেশন।