সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়নের এক ব্যক্তির মেয়ে স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে। একই গ্রামের এক যুবকের (২৫) সঙ্গে বুধবার বিকেল চারটার দিকে ওই ছাত্রীর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে ওই দিন বেলা তিনটার দিকে ওই বিয়ের আয়োজনের খবর পান ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই বিয়ে বন্ধ করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ইউপি চেয়ারম্যান ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সেখানে একজন নারী গ্রাম পুলিশকে পাঠান। এই সময় বরযাত্রীরা কনের বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু উপজেলা প্রশাসন যে বাল্যবিবাহের ঘটনা জেনে গেছে, তা বুঝতে পেরে বরযাত্রীরা আর কনের বাড়িতে যাননি।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে নারী গ্রাম পুলিশ গতকাল বিকেলে কনের বাড়িতে গিয়ে কনের বাবাকে বাল্যবিবাহের কুফল বুঝিয়ে বলেন এবং মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়ার আগে কোথাও বিয়ে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন।
ওই ছাত্রীর বাবা দাবি করেন, ‘আমাদের বাড়িতে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। আমার মেয়েকে একই গ্রামের একটি ছেলে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিল। এ জন্য গতকাল ছেলের পরিবারের কয়েকজন নারী আমার মেয়েকে দেখতে এসেছিলেন। তাঁদের খাবার খাইয়ে আমি বিদায় করে দিয়েছি। ১৮ বছর না হলে আমি আমার মেয়েকে কোথাও বিয়ে দেব না।’
বংশীকুণ্ডা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসাইন বলেন, ওই ছাত্রীর বাল্যবিবাহ আয়োজন করার বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। পরে ইউএনওর কাছ থেকে খবর পেয়ে একজন নারী গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে ওই বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্য বিয়ে একটি সামাজিক ব্যাধি ও অপরাধ। রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরনের বিয়ের কোনো স্বীকৃতি নেই। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার কারণে এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। বাল্যবিবাহ রোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।