মেয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইলেন বাবা মোজাম্মেল হক। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা অব্যাহত রাখার দাবি জানালেন তিনি। আজ রোববার সকালে রাজধানীতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।
গত ১৮ আগস্ট জমি নিয়ে বিরোধের জেরে পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমরা ইউনিয়ন ও গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের মেয়ে মুক্তি খাতুনের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে মারাত্মক দগ্ধ হন তিনি। ১০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে গত ২৭ আগস্ট মারা যান।
পুলিশ, এলাকাবাসী, পরিবারের সদস্যদের সূত্রে জানা যায়, নাগডেমরা গ্রামের একটি উন্মুক্ত জলাশয়ের দখলকে কেন্দ্র করে মুক্তির বাবার সঙ্গে একই গ্রামের আবদুস সালাম ও তাঁর লোকজনের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ২ আগস্ট সালামের লোকজন মুক্তিদের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এরপর থেকে মুক্তিদের বাড়ির লোকজন এলাকাছাড়া। পরে পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে মোজাম্মেল হক পরিবারের লোকজন নিয়ে বাড়ি ফেরেন। কথা ছিল ঈদের পরে প্রশাসনের উদ্যোগে দুই পক্ষকে নিয়ে বিরোধটির মীমাংসা করা হবে। কিন্তু ১৮ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে আবদুস সালামের নেতৃত্বে ৩০ থেকে ৪০ জনের একটি সশস্ত্র দল মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা করে। এ সময় বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য ছিলেন না। প্রতিপক্ষের লোকজন মুক্তিকে উঠানে ধরে এনে গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মুক্তি খাতুন পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের দর্শন বিষয়ের স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। ঈদ উপলক্ষে কলেজ ছুটি হওয়ায় তিনি বাড়ি এসেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক বলেন, ঘরবাড়ি, সহায় সম্পদ ও সন্তান হারানোর বেদনা নিয়ে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও যথাযথ বিচার করে দুষ্কৃতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। এ সময় তিনি তার ও তাঁর পরিবারের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।