দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই যেন প্রশান্ত রায়ের নিয়তি। তবে তিনি হার মানেননি দারিদ্র্যের কাছে। নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই করে তিনি এবার উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেছেন। সুযোগ পেয়েছেন সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়ার। ধার করে ভর্তির টাকা জোগাড় করেছেন তাঁর দিনমজুর বাবা। কিন্তু ভর্তির ব্যবস্থা হলেও স্বস্তিতে নেই প্রশান্ত। সংসারের অভাব-অনটন তাঁকে আঁকড়ে ধরেছে। মেডিকেল কলেজে পড়ানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই তাঁর পরিবারের। তাই শেষ পর্যন্ত পড়তে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
প্রশান্ত পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর গ্রামের অশ্বিনী রায় ও প্রিয় বালা রাণী দম্পতির ছেলে। এবার তিনি ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৪ দশমিক ৮৩ পেয়েছেন। এসএসসিতে গ্রামের রাধানগর হাজী সাহার আলী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে তিনি হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গত মাসে তিনি হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন।
পরিবারের দুই ভাইবোনের মধ্যে প্রশান্ত ছোট। বড় বোন স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। বাবা দিনমজুর। জমিজমা নেই। দিনমজুরি করে দুই ছেলেমেয়েকে পড়াচ্ছেন। প্রশান্ত এলাকায় প্রাইভেট পড়িয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেছেন। কিন্তু ভর্তির পর প্রশান্তের পড়ালেখা চলবে কী করে, তা নিয়ে তাঁর বাবা-মায়ের চিন্তার শেষ নেই।
ছেলের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের পরও বাবা অশ্বিনী রায়ের দুশ্চিন্তা শেষ হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘আমার তো প্রশান্তকে কলেজে পড়ানোর সামর্থ্য ছিল না। ও প্রাইভেট পড়িয়ে নিজে পড়েছে। এখন মেডিকেলে পড়ানোর এত টাকা পাব কোথায়? ডাক্তারি পড়াব কী করে? মেয়েটা পড়ছে। দিনমজুরি করে সংসার চালাই। নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা।’