কক্সবাজারে অপহরণের পর হত্যা

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে খালাস দিলেন হাইকোর্ট

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

সাত বছর আগে কক্সবাজারে অপহরণের পর শিশু হৃদয় মণিকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ওপর শুনানি শেষে এই রায় দেওয়া হয়। খালাসপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মিয়ানমারের নাগরিক মো. আবদুল খালেক, আবদুস শুক্কুর ও চট্টগ্রামের চন্দনাইশের মো. বাহাদুর মিয়া।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৩ সালে ৪ জুলাই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটার বাসিন্দা নুরুল হকের ছেলে হৃদয় মণিকে (৬) অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরদিন পুলিশ সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই নুরুল হক বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। এই মামলায় ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল খালেক, বাহাদুর মিয়া, আবদুস শুক্কুর ও জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৫ সালের ৭ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার রায় দেন।

রায়ে একজনকে খালাস, তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড

রায়ে জসিমকে খালাস দিয়ে অপর তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। এসবের শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়।

আসামি বাহাদুর মিয়ার পক্ষে আইনজীবী আবদুস সালাম মামুন এবং আবদুল খালেকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির ও মো. আসাদ উদ্দিন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান। শুক্কুর মিয়ার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত হিসেবে ছিলেন আইনজীবী শাহনাজ হক।

পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের মাধ্যমে জবানবন্দি আদায় করা হয়

পরে শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, বাহাদুর ও খালেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন। এই জবানবন্দি আইনের দৃষ্টিতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নয়। কারণ, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের মাধ্যমে জবানবন্দি আদায় করা হয়, যা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত নয়। জবানবন্দির জন্য খালেক ও বাহাদুর একই সময়ে ম্যাজিস্ট্রেট কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া দাখিল করা কল রেকর্ড সাক্ষ্য আইনের বিধি অনুসারে আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি—এসব যুক্তি আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, তিনজন কারাগারে আছেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করবে।