ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনসহ চার বিবাদীর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের করা মানহানির মামলাটির কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মুনতাসীর মামুনের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন।
২০০৫ সালে ফেব্রুয়ারিতে মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘বাংলাদেশ চর্চা/৩’ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়। ‘মুক্তিযুদ্ধে দৌলতপুর: একটি সমীক্ষা’ শিরোনামে বইয়ে একটি প্রবন্ধ লেখেন মো. আবুবকর সিদ্দিকী। প্রবন্ধে স্থানীয় পিস (শান্তি) কমিটির নামের তালিকার ৩৬ নম্বর ক্রমিকে ‘মৃত মোসলেম বাওয়ালী’ নাম রয়েছে। মোসলেম বাওয়ালী মুন্নজান সুফিয়ানের বাবা।
এই তথ্যের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রতিমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান বাদী হয়ে মুনতাসীর মামুনসহ চার বিবাদীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, বাদীর পিতা শান্তি কমিটির সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে শান্তি কমিটির সদস্য হিসেবে দেখানো হয়েছে।…বাদীর গোটা পরিবার তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা, কর্মী এবং মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন।
এরপর তামাদি আইনের ২৪ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে মানহানির মামলার ওই আরজি খারিজ চেয়ে গত বছরের ২২ জুলাই আদালতে আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন। এই আবেদন চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি খারিজ হয়। এর বিরুদ্ধে ২৬ আগস্ট হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন, যার ওপর আজ শুনানি হয়। আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ কে রাশেদুল হক।
হাইকোর্ট বেঞ্চের আদেশ নিয়ে আইনজীবী রাশেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘তামাদি আইনের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুসারে মানহানির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার এক বছরের মধ্যে মামলা করতে হয়। ওই বইটি প্রকাশের ১৪ বছর পর মন্নুজান সুফিয়ান ওই মামলাটি করেন। প্রবন্ধে শান্তি কমিটির তালিকায় “মৃত মোসলেম বাওয়ালীর” নাম এসেছে, যিনি মন্নুজান সুফিয়ানের বাবা বলা হয়েছে। তবে বাবার মানহানির কারণে ক্ষতিপূরণ আদায়ে তার সন্তান মানহানির মামলা করতে পারেন না। এ ছাড়া বইয়ে মন্নুজান সুফিয়ান সম্পর্কে মানহানিকর কোনো বক্তব্য বা তথ্য আসেনি—এসব যুক্তিতে আবেদন করা হয়। ওই আরজি খারিজের ২৩ জানুয়ারির আদেশ কেন বাতিল হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’