মুখ পরিষ্কার রাখা এবং খাবার হজমের বিষয়ে আমাদের মুখের লালা কাজ করে থাকে। এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক নিয়ন্ত্রণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। লালা শুধু খাবার হজম করতে সাহায্য করে, তা নয়। খাবার চিবানো, খাবার গিলতে ও কথা বলতে সাহায্য করে। যদি পর্যাপ্ত লালা উৎপাদিত না হয়, তবে মুখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এ রোগের নাম জেরোস্টোমিয়া।
মুখের মধ্যে আঠালো, শুষ্ক অনুভূতি হয়। ঘন ঘন তৃষ্ণা, মুখের ভেতর ও কোণে ঘা, ঠোঁট ফাটা, গলায় শুষ্ক অনুভূতি এ রোগের অন্যতম লক্ষণ। নাকের ভেতর শুষ্কতা, গলাব্যথা ও নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে।
হতাশা, উদ্বেগ, ব্যথা, অ্যালার্জি এবং সর্দি, স্থূলতা, ব্রণ, মৃগীরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধের একটি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে মুখের শুষ্কতা। এ ছাড়া মানসিক রোগ, অ্যাজমা এবং পারকিনসন রোগের ওষুধের প্রভাবেও হতে পারে।
ডায়াবেটিস, রক্তস্বল্পতা, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্নায়বিক রোগ, এইচআইভি, স্ট্রোক, মাম্পসের মতো কিছু রোগ এবং সংক্রমণের কারণেও মুখের শুষ্কতা তৈরি হয়।
যদি মুখ শুষ্কতার কারণ কিছু ওষুধ হয়, যা আপনি সেবন করছেন, তবে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। লালার প্রবাহ কম হলে দাঁতের ক্ষয় এবং মাড়ির রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তাই দিনে অন্তত দুবার খাবারের পর এবং শোবার আগে দাঁত ব্রাশ করুন। ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করা ও দাঁত ফ্লস করা জরুরি। বছরে অন্তত দুবার দন্তচিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মুখের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে কিছু মাউথওয়াশ, লালা উৎপাদক কিছু ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন দন্তচিকিৎসকের পরামর্শে।
এ ছাড়া শুষ্কতা উপশমে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ক্যাফেইনযুক্ত কফি বা চা পান করলে মুখ শুষ্ক হয়ে যায়। তাই কফি-চা সীমিত আকারে পান করুন। ধূমপান ও তামাকের অভ্যাস থাকলে ত্যাগ করুন।