ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই শিল্পাঞ্চলের রণারচালা এলাকায় মহাসড়কের পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে পানিনিষ্কাশনের জন্য থাকা একটি কালভার্ট বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে। পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের উৎকট গন্ধ সহ্য করে ওই এলাকা পার হতে হচ্ছে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন স্থানীয় লোকজন।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় চার বছর আগে ওই এলাকায় ময়লা ফেলা শুরু হয়। গভীর রাতে কে বা কারা ভ্যান বা ট্রাকযোগে ময়লা ফেলত। মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরুর পর সেখানে ময়লা ফেলা বন্ধ হয়। বছরখানেক আগে মহাসড়কের ওই অংশে কালভার্ট নির্মাণকাজ শেষ হয়। এরপর সেখানে আবারও রাতের আঁধারে ময়লা ফেলা শুরু হয়।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, মহাসড়কের পশ্চিম পাশে প্রায় ২০০ ফুট লম্বা এলাকাজুড়ে ময়লার ভাগাড়। ভাগাড়ের মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে পানিনিষ্কাশনের জন্য কালভার্ট। রণারচালা ও নাজিরপাড়াসহ আশপাশের এলাকার পানিনিষ্কাশনের জন্য থাকা খালের পানি এই কালভার্টের মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী বংশাই নদে গিয়ে পড়ে বলে স্থানীয় লোকজন জানান।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবুল হাছান বলেন, রাতের আঁধারে কে ময়লা ফেলে, তা ধরা যায় না। ময়লা ফেলার কারণে পানিনিষ্কাশনের কালভার্টের মুখের অধিকাংশ স্থান বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় একটি কারখানার কর্মী দুলালী রানী বলেন, ‘রাস্তার ময়লা বৃষ্টি আইলেই পানিতে মিশা আমাদের বাসার ভেতরে ঢুইকা যাইতাছে। ওই পানি পাড়ানোর কারণে পায়ে ঘা ধইরা গেছে। গেট খুললেই ময়লার গন্ধ আসে। গরমের সময় জানালা খুলা পারি না। পোলাপান বাইরে দাঁড়িয়ে একটু খেলব, হেই সুযোগও নাই।’
বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের বিপণন কর্মকর্তা আবদুর রহমান খান বলেন, ‘ময়লার কারণে আমরা শারীরিকভাবে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। শ্বাসকষ্ট হয়। গন্ধে টেকা যায় না। মশা-মাছির উপদ্রব বাড়ছে। কালভার্টের মুখ বন্ধ হওয়ায় বৃষ্টির সময় ঠিকমতো পানিনিষ্কাশন হচ্ছে না। একপাশে বেশি পানি জমছে। বাসাবাড়িতে ময়লাসহ পানি ঢুকে যাচ্ছে।’
মুদিদোকানি মফিজ প্রধান জানান, দুর্গন্ধের কারণে রাস্তায় হাঁটা যায় না। দম বন্ধ হয়ে আসে।
গোড়াই শিল্পাঞ্চলের রণারচালা এলাকায় রাস্তার পাশে ওই স্থানে এর আগে কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের সময় একটি পাইপের মাধ্যমে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা করেছিল কর্তৃপক্ষ। সেটি এখনো রয়ে গেছে।
গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আদিলুর রহমান বলেন, ‘কয় দিন আগে চৌকিদার খাড়া কইরা র্যাইখা চেক করছি। রাত ১২টার পর ময়লাগুলা ফেলত। পুরা গোড়াই এলাকার পাবলিক আসত, গাড়ি আর ভ্যান আসত ময়লা ফেলার জন্য। বাঁশ দিয়্যা বেড়া দেয়াতে কয় দিন ধইর্যা বন্ধ হইছে। অহন রোডস থিক্যা আরও বিপদে ফালাইছে। আগে রাস্তার পাশে ময়লা আছিল। রোডসের লোক এক্সকাভেটর দিয়্যা ধাক্কাইয়া ময়লা নিচে ফেইলা কালভার্টের মুখ বন্ধ কইর্যা ফালাইছে। আমরা এলাকাবাসী নিয়্যা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কালভার্টের মুখ কিছুডা পরিষ্কার করছি। ময়লাগুলা জরুরিভাবে সরানো উচিত।’
এ ব্যাপারে মির্জাপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী এনামুল কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘মহাসড়কটি বর্তমানে চার লেন প্রকল্পের অধীনে রয়েছে। কিছু করতে হলে সেই প্রকল্প থেকেই করতে হবে।’ বক্তব্য জানতে চার লেন প্রকল্পের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মাহাবুবুল আলমের মুঠোফোন নম্বরে গতকাল একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।