গুপ্তধনের খোঁজে মিরপুরের সেই বাড়িতে খোঁড়াখুঁড়ি

বাড়িতে গুপ্তধন আছে—এমন তথ্যর ভিত্তিতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় ধরে খননকাজ চলে মিরপুর ১০ নম্বরের এই বাড়িতে। ছবি: প্রথম আলো
বাড়িতে গুপ্তধন আছে—এমন তথ্যর ভিত্তিতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় ধরে খননকাজ চলে মিরপুর ১০ নম্বরের এই বাড়িতে। ছবি: প্রথম আলো

প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় ধরে খননকাজ চলার পরও রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরের সেই বাড়ি থেকে কোনো গুপ্তধন পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে বাড়ি খননের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ারুজ্জামান। এরপরই বিকেল চারটা থেকে খননকাজ বন্ধ করা হয়।

এর আগে আজ শনিবার শনিবার সকাল ১০টা থেকে মিরপুর-১০-এর সি ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর বাড়িতে গুপ্তধনের সন্ধানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনোয়ারুজ্জামানসহ মিরপুর থানা-পুলিশের উপস্থিতিতে মাটি খননকাজ শুরু করেন ২০ জন শ্রমিক। টিনশেডের ওই বাড়ির সাতটি কক্ষের মধ্যে দুটি কক্ষের প্রায় চার ফুট গভীর পর্যন্ত শাবল, কোদাল দিয়ে খনন করেন তাঁরা। কিন্তু ছয় ঘণ্টার খননকাজ চলার পর সেখান থেকে গুপ্তধন বা মূল্যবান কোনো বস্তু পাওয়া যায়নি।

খননকাজ বন্ধ করার পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের বলেন, বাড়ির অবকাঠামো বেশ দুর্বল। মজবুত কাঠামোর ওপর এই বাড়ির ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়নি। এখানে খননকাজ করা হলে ঘরগুলো ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আজ খননকাজ বন্ধ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গুপ্তধন পাওয়া গেলেও এর প্রতি কোনো দাবি নেই বলে জানান বাড়ির মালিক মনিরুল আলম। ঘটনাস্থলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সেলিম রেজা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২০১০ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন। বাড়ির দেখাশোনার জন্য দুজন তত্ত্বাবধায়ক রাখা হয়। এ ছাড়া বাড়িটির কয়েকটি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়। সম্প্রতি বাড়িটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণকাজ শুরু হবে জানিয়ে ভাড়াটেদের চলে যেতে বলা হয়। এরপর ১২ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টার দিকে দুজন লোক বাড়িটিতে ঢোকার চেষ্টা করেন। তাঁরা তত্ত্বাবধায়কদের ঢোকার জন্য আর্থিক প্রলোভনও দেখান। পরে তাঁরা এই বাড়ির মাটির নিচে গুপ্তধন রয়েছে বলে জানান। তাঁদের মধ্যে আবু তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি ছিলেন।

বাড়িতে গুপ্তধন আছে—এমন তথ্যর ভিত্তিতে খননকাজ চলে মিরপুরের একটি বাড়িতে। আর বাইরে উৎসুক মানুষের ভিড়। ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর বাড়ি, মিরপুর ১০, ঢাকা, ২১ জুলাই। ছবি: প্রথম আলো

মনিরুল আলম বলেন, ‘গুপ্তধন পাওয়া গেলে সরকারি কোষাগারে জমা হোক এটাই আমি চাই। এর প্রতি আমার কোনো দাবি নেই।’

মিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দাদন ফকির বলেন, মিরপুরের এই বাড়িতে গুপ্তধন আছে জানিয়ে ১০ জুলাই আবু তৈয়ব নামের এক ব্যক্তি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ঢাকা জেলা প্রশাসনকে জানানোর পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাড়ির মাটি খননকাজ চালানো হয়। কিছু না পাওয়ায় শনিবার বিকেল চারটার পর সেটি বন্ধ করা হয়।