স্মৃতির মেঘলাভোরে শেষ ডাক ডাকছে ডাহুক/ অদৃশ্য আত্মার তরী কোন ঘাটে ভিড়ল কোথায়?/ কেন দোলে হৃৎপিণ্ড, আমার কি ভয়ের অসুখ?/ নাকি সেই শিহরণ পুলকিত মাস্তুল দোলায় !/
আমার যাওয়ার কালে খোলা থাক জানালা দুয়ার/ যদি হয় ভোরবেলা স্বপ্নাচ্ছন্ন শুভ শুক্রবার।...মৃত্যুকে কামনা করে লিখেছিলেন কবি আল মাহমুদ। কবির মৃত্যুর তরীর শেষ ঠিকানা হলো তাঁর গ্রামের বাড়িতেই।
আজ রোববার বাদ জোহর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে কবির তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সেখানে সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে প্রিয় কবিকে শেষবারের মতো বিদায় জানান। এরপর বেলা তিনটার দিকে দক্ষিণ মৌড়াইল এলাকার কবরস্থানে পারিবারিক জায়গায় মা-বাবার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা সাহিত্যের এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদ।
জানাজার সময় কবির ছেলে মীর মাহমুদ মনির, কবির একান্ত সচিব আবিদ আজমসহ অনেকে বক্তব্য দেন। মীর মাহমুদ মনির বলেন, ‘আমার বাবা শুধু একজন কবি নন, একজন মুক্তিযোদ্ধাও। তিনি নদ, নদী ও প্রকৃতি নিয়ে লেখার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ, নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.), ইসলাম, ক্ষুদিরাম, তিতুমীরসহ অনেক বিষয় নিয়ে কবিতা লিখেছেন। আমার বাবার ভালো গুণ ছিল, তিনি অল্পতেই সন্তুষ্ট হতেন।’
আল মাহমুদ ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আসল নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। তাঁর বাবা মীর আবদুর রব ও মা রওশন আরা মীর। তাঁর দাদা আবদুল ওহাব মোল্লা ব্রিটিশ-ভারত শাসনামলে হবিগঞ্জ জেলায় জমিদার ছিলেন। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি সবার বড় ছিলেন। পাঁচ ছেলে, তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন কবি আল মাহমুদ।