মায়ের ভাষায় ঘুমপাড়ানি গান আয়োজনের পুরস্কার বিতরণ

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিজুড়ে এসিআই পিওর সুজি আয়োজন করে ‘মায়ের ভাষায় ঘুমপাড়ানি গান’ শিরোনামে এক আয়োজন। সন্তানকে যে বাংলা গান বা ছড়া শুনিয়ে ঘুম পাড়ান, সেই মুহূর্তের ভিডিও ও আপনি যখন ছোট ছিলেন, আপনাকে যে গান বা ছড়া শুনিয়ে ঘুম পাড়ানো হতো, সেই স্মৃতিও লিখে এ আয়োজনে অংশ নিয়েছেন প্রতিযোগীরা। এ আয়োজনের সহযোগী ছিল প্রথম আলো।

২৯ মার্চ বিকেলে প্রথম আলো কার্যালয়ে এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও সাহিত্যিক আনিসুল হক। ‘মায়ের ভাষায় ঘুমপাড়ানি গান’ আয়োজনে প্রথম হয়েছেন মুনমুন চৌধুরী। দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছেন যথাক্রমে মো. নাফিস খান ও শরীফা ইয়াসমিন উল্লাসী। পুরস্কার বিজয়ী বাকি সাতজন হলেন শান্তা, রাওসা নাসিম, সামিয়া জামান জলি, আয়মান আতিয়া, শতাব্দী ভৌমিক, সায়মা ও ঊর্মি লাবণী চক্রবর্তী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনিসুল হক বলেন, ‘মায়ের ভাষা বা গান হলো সবচেয়ে সুমধুর। সবার আগে আমরা মায়ের মুখের ভাষা শুনি এবং সেই ভাষা শুনেই আমরা বড় হতে থাকি। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে বিভিন্ন ভাষা শিখতে হবে। কিন্তু মায়ের ভাষাকে কখনো ছোট করা যাবে না। আমরাই একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। তাই বাংলা ভাষা আমাদের কাছে অনেক দামি।’

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এসিআই পিওর সুজির পণ্য ব্যবস্থাপক অরুন্ধতী ঊর্মিলা। এ সময় তিনি বলেন, ‘এ আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এ আয়োজন করতে গিয়ে আমরা সবাই শৈশবে ফিরে গেছি। বাচ্চাদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য মায়ের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। এ আয়োজনের মাধ্যমে আমার সন্তান ও মা–বাবার মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি করার চেষ্টা করেছি। এসিআই সব সময় ভালো কাজের সঙ্গে থাকতে চায়। এ আয়োজন তারই ধারাবাহিকতা।’

পুরস্কার বিজয়ীদের মধ্য থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক কর্মকর্তা শামসুল কবির খান জানান, ‘প্রথম আলো সব সময় ভালোর সঙ্গে থাকে। তাই আমরাও প্রথম আলোর সঙ্গে আছি। এ আয়োজনের মাধ্যমে ছোটদের উৎসাহিত করা হয়েছে। নিজের ভাষা শেখানোর জন্য এমন আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
মাসব্যাপী এ আয়োজনে সেরা তিনজনকে এসিআই পিওর সুজি ও প্রথম আলোর পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। বাকি সাতজনকেও এসিআই পিওর সুজির পক্ষ থেকে দেওয়া হয় পুরস্কার।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘মায়ের ঘুমপাড়ানি গানে শিশুরা ঘুমিয়ে পড়ে স্বপ্নের আবেশে। মাতৃভাষার প্রতি আমাদের ভালোবাসা শুরু হয় মায়ের মুখে ঘুমপাড়ানি গান শুনেই। যুগে যুগে সেই গানের কথা, সুরের পরিবর্তন এলেও সেই ব্যঞ্জনা একই রয়ে গেছে। মাতৃভাষায় ঘুমপাড়ানি গান গাওয়া সেই মায়েদের নিয়েই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আমাদের বিশেষ আয়োজন “মায়ের ভাষায় ঘুমপাড়ানি গান”। ঘুমপাড়ানি ছড়া বা গান আমাদের বাংলা ভাষার ঐতিহ্য। এখন হয়তো শিশুদের মুঠোফোনে অন্য ভাষার গান শুনিয়ে ঘুম পাড়াই, যেটা আমাদের এই ঐতিহ্যকে হুমকির মুখে ফেলছে। তাই আসুন, বহুকাল ধরে চলে আসা আমাদের এই ঘুমপাড়ানি গানের ঐতিহ্য বাঁচিয়ে রাখি।’