চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের দেওয়া বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ ও ‘অপবাদ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেছেন, মাহবুব তালুকদার মিথ্যাচার করেন। তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দেন। হয়তো তাঁর কোনো অ্যাজেন্ডা আছে, সেটা বাস্তবায়নের জন্য তিনি এমন বক্তব্য দেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন।
গতকাল বুধবার পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে মাহবুব তালুকদার বলেছিলেন, সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ যেন ইউপি নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই। ইউপি নির্বাচনে এখন উৎসবের বাদ্যের বদলে বিষাদের করুণ সুর বাজছে। নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না।
মাহবুব তালুকদারের এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নূরুল হুদা সাংবাদিকদের বলেন, ‘উনি (মাহবুব তালুকদার) তো এ রকম বলেন সব সময়। একেকটা সময় একেকটা শব্দ চয়ন করেন। ছেড়ে দেন মিডিয়ায় প্রচার করার জন্য। এই কথাগুলো অপ্রাসঙ্গিক। অপ্রচারমূলক কথা। নির্বাচন কমিশনকে অপবাদ দেওয়া কথা।’
সিইসি বলেন, ‘ভোটযুদ্ধ আছে, ভোট নেই! তাহলে ৭৫ শতাংশ ভোটার কোত্থেকে আসে? টেলিভিশনে দেখিয়েছেন, সারিবদ্ধভাবে নারী-পুরুষ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। তাহলে এরা কারা? এরা কি ভোটার নন? সুতরাং ওনার (মাহবুব তালুকদার) কথার কোনো সংগতি নেই।’
ইউপি নির্বাচনে প্রাণহানির জন্য আবার প্রার্থী ও সমর্থকদের দায়ী করেন নূরুল হুদা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রাণহানির ঘটনায় নির্বাচন কমিশন একেবারেই দায়ী নয়। সহিংসতা হয় প্রার্থীদের নিজেদের কোন্দলের কারণে। নির্বাচন ব্যবস্থাপনার জন্য হয় না। প্রার্থী ও তাঁর সমর্থকেরা প্রাণহানির জন্য দায়ী।
ইউপি নির্বাচনের পঞ্চম ধাপের ভোটও রক্তপাতহীন, শান্তিপূর্ণ হয়নি। আশঙ্কা করা হচ্ছিল, অন্যান্য ধাপের মতোই এই ধাপেও সহিংসতা ঘটবে। সেই আশঙ্কা সঠিক প্রমাণ করে গতকাল দেশের ৭০৮টি ইউপিতে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ধাপের ভোটে প্রাণ গেছে ১১ জনের। দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, পাল্টাপাল্টি হামলা, গোলাগুলি, গাড়ি ভাঙচুরের মতো সহিংসতার ঘটনায় এসব প্রাণহানি ছাড়াও আহত হয়েছেন অনেকে।