মাসুদ রানা ও কুয়াশা সিরিজের বই প্রকাশ নিয়ে কপিরাইট অফিসের সিদ্ধান্ত স্থগিত

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

‘মাসুদ রানা’ ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের কিছু বইয়ের বিষয়ে কপিরাইট অফিসের দেওয়া আদেশ এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। গত ১৪ জুন কপিরাইট অফিসের দেওয়া আদেশে ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি ও ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের পক্ষে সিদ্ধান্ত আসে। ফলে লেখক হিসেবে তাঁর স্বত্ব পাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। এছাড়া বইগুলো প্রকাশ ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই আদেশের বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

কাজী আনোয়ার হোসেন গত মাসে হাইকোর্টে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন ও হামিদুল মিসবাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবশিস ভট্টাচার্য্য ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম আহমেদ।

পরে হামিদুল মিসবাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাসুদ রানা সিরিজের ২৬০টি ও কুয়াশা সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে শেখ আবদুল হাকিমের স্বত্ব বিষয়ে ১৪ জুন কপিরাইট অফিস আদেশ দেন। বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারীর প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্ট কপিরাইট অফিসের ওই সিদ্ধান্ত এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। এর ফলে সেবা প্রকাশনী বইগুলো আগের মতো প্রকাশ করতে পারবে।’

রুলে কপিরাইট অফিসের ১৪ জুন দেওয়া আদেশ কেন এখতিয়ারবহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। সংস্কৃতিসচিব, কপিরাইট অফিস ও রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস ও কপিরাইট বোর্ডসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এর আগে গত বছরের ২৯ জুলাই আবদুল হাকিম ‘মাসুদ রানা’ সিরিজের ২৬০টি এবং ‘কুয়াশা’ সিরিজের ৫০টি বইয়ের লেখক হিসেবে স্বত্ব বা মালিকানা দাবি করে সেবা প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী কাজী আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে চলতি বছরের ১৪ জুন আদেশ দেয় কপিরাইট অফিস।

এই আদেশে বলা হয়, সুষ্ঠু সমাধান ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে কপিরাইট বোর্ড বা বিজ্ঞ আদালত থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগ পর্যন্ত আবেদনকারীর দাবি করা ও তালিকাভুক্ত বইগুলোর প্রকাশ বা বাণিজ্যিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য প্রতিপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হলো। এ ছাড়া প্রতিপক্ষকে আবেদনকারীর কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন করা প্রকাশিত বইগুলোর সংস্করণ ও বিক্রীত কপির সংখ্যা এবং বিক্রয়মূল্যের হিসাব বিবরণী এ আদেশ জারির পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসে দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হলো। এই আদেশের বৈধতা নিয়েই কাজী আনোয়ার হোসেন রিটটি করেন।