বিএম ডিপোর ঘটনায় প্রতিবেদন

মালিকের পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোর দায় আছে

রাসায়নিক দ্রব্য পরিবহন ও গুদামজাতকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে যেমন যুগোপযোগী কোনো আইন নেই, তেমনি সমন্বিত কোনো বিধিমালা বা নীতিমালাও নেই
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের দায় ডিপোর মালিকের পাশাপাশি সরকারি সংস্থাগুলোরও রয়েছে। ডিপো পরিচালনার জন্য ২৫টি সংস্থার ছাড়পত্র প্রয়োজন। তবে এই সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় নেই। ফলে কার লাইসেন্স লাগবে, আর কার লাগবে না, তা নির্ধারণ করার কোনো সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম নেই।

বিএম কনটেইনার ডিপোয় অগ্নিকাণ্ডের পর গঠন করা বিভাগীয় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বুধবার এই প্রতিবেদন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড হয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পরদিন ৫ জুন বিভাগীয় কমিশনার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেন।

আজ দুর্ঘটনার কারণ, দায় ও সুপারিশ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. মিজানুর রহমান।

দুর্ঘটনার কারণ কী—এমন প্রশ্ন করা হলে মিজানুর রহমান সরাসরি জবাব না দিয়ে বলেন, সবাই বলছেন, হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড নিরীহ রাসায়নিক। কিন্তু বাস্তবে তা সঠিক নয়। হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড নিজে জ্বলে। অত্যধিক তাপে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।

অগ্নিকাণ্ডের জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের দায় কতটা এমন প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ঘরে আগুন লাগলে আমার দায় রয়েছে। তেমনি পাড়া–প্রতিবেশীদের দায়ও রয়েছে। আমাদের সবার দায় রয়েছে। এই ঘটনার পর বন্দর, কাস্টমস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ ছয় সংস্থার কাছ থেকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে প্রতিবেদন নেওয়া হয়েছে।’

তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, আইসিডি বা ডিপো ব্যবস্থাপনায় ২৫টি সংস্থার ছাড়পত্রের দরকার হয়। কিন্তু এগুলোর সমন্বিত কোনো প্ল্যাটফর্ম নেই। মন্ত্রণালয়ে একটি পর্যবেক্ষণ কমিটি রয়েছে। ওই কমিটিতে ২৫টি দপ্তরকে অন্তর্ভুক্ত করলে তারা নির্ধারণ করতে পারবে, কার ছাড়পত্র লাগবে, কার লাগবে না।

তদন্ত প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক নম্বরে ১৯৫৩ সালের বিপজ্জনক পণ্য আইনের সংশোধনের সুপারিশ করা হয়।