মাদারীপুর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মিলটন বৈদ্যের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। হামলায় অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এ সময় প্রার্থীর বাড়িতে থাকা একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। তবে আওয়ামী লীগের অভিযোগ, তাঁদেরও ৫-৭ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
বিএনপির প্রার্থী মিলটন বৈদ্য প্রথম আলোকে বলেন, রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান টিপুর নেতৃত্বে একটি মিছিল নিয়ে এই হামলা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা জাহিদুর রহমান টিপুর সমর্থকেরা বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নৌকার পক্ষে মিছিল বের করেন। মিছিলটি আমগ্রাম বাজার হয়ে বিএনপি প্রার্থীর বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় বিএনপি প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এর কিছুক্ষণ পরই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আরেকটি মিছিল নিয়ে এসে মিলটনের বাড়িতে হামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রটি জানায়, হামলাকারীরা বিএনপি প্রার্থীর বাড়ির ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন। পরে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মাইক্রোবাসও ভাঙচুর করেন। পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিএনপির প্রার্থী মিলটন বৈদ্য বলেন, ‘সন্ধ্যার পরে আমার বাড়িতে হঠাৎ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। আমার বাড়ির ভেতর এখন কিছু নাই। সব ওরা লুট করে নিয়ে গেছে। আমার সমর্থকেরা আমাকে কৌশলে বাড়ি থেকে পাশে সরিয়ে নেয়। নয়তো ওরা আমাকে মেরেই ফেলত। আমাকে লক্ষ্য করে কেন এমন হামলা? আমরা কি সংসদ নির্বাচন করতে পারব না?’
মিলটনের স্ত্রী কবিতা বৈদ্য অভিযোগ করেন, ‘শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের প্রচারণা চালাতে বাধা দিয়ে যাচ্ছে। এখন নির্বাচনের ৪-৫ দিন বাকি। আমরা আজ কিছু স্থানে পোস্টার ও প্রচারণা শুরু করেছিলাম। এ কারণেই আওয়ামী লীগের নৌকার সমর্থকেরা আমাদের চিরতরে থামিয়ে দিতে আমাদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালায়। আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুর রহমান টিপু মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি তো সব সময় নাটক করে। তারা অভিনয় ছাড়া কিছুই বোঝে না। তাদের কারণে আমরা এলাকায় মিছিল করতে পারছি না। আজ তারা আমাদের মিছিলকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল মারে। এতে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন, যা বাজারের লোকজন সব দেখেছে।’
রাজৈর থানার কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে শুনেছি দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। তবে গাড়ি বা বাড়িতে লুটপাটের বিষয়ে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার বলতে পারবেন। বিএনপির প্রার্থী যদি অভিযোগ করেন, তবে তদন্ত করে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের কাউকে পাওয়া যায়নি।