স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, মাদকের চাহিদা কমানো গেলে সরবরাহ কমে যাবে। তবে মাদকের সরবরাহ কমাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।
আজ রোববার সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে মাদক তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি (এনআইএমএস) নামের সফটওয়্যার উদ্বোধন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান বলেন, এনআইএমএসের মধ্যে দিয়ে এখন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকতারা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হতে পারবে। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আগে যেসব কাজ করতেন, তার আধুনিকায়ন করতেই এনআইএমএস চালু করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদক এমন একটি নেশা, যা সমাজকে ধ্বংস করে। নতুন প্রজন্ম ও যুবসমাজকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা) নীতি নিয়েছেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, মাদকদ্রব্যের ব্যবহার রোধে সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে কোস্টগার্ড, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। মাদক প্রতিরোধে দক্ষিণ কোরিয়া সহযোগিতা করে আসছে। তারা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। জঙ্গি ও সন্ত্রাস যেমন দমন করা গেছে, তেমনি মাদকও নির্মূল করা যাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে মাদক আসছে। কিছু স্থান রয়েছে, যেখান দিয়ে মাদক ঢোকে, সেখানে সীমান্ত সড়ক করা হবে। এসব স্থানে বিজিবির হেলিকপ্টার টহল দেবে, যাতে বাংলাদেশে মাদক ঢুকতে না পারে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবা বিক্রি হচ্ছে না। বাইরে রোহিঙ্গারা যাতে ইয়াবা বিক্রি করতে না পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর আছে। মাদকসম্রাট হিসেবে পরিচিত অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা মাদক কারবারিতে টাকা বিনিয়োগ করেছে, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নেটওয়ার্কের মধ্যে আছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, সেবা পাওয়ার জন্য এখন আর কাউকে দপ্তরে আসতে হবে না। যেকেউ অনলাইনে আবেদন করে প্রত্যাশিত সেবা পাবেন। এত দিন এক লাখেরও বেশি মামলা তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাব ছিল। এনআইএমএস চালু হওয়ার ফলে মামলার তদন্তে তদারকের গতি বাড়বে। তিনি বলেন, লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা যাবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব তরুণ কান্তি সরকার বলেন, ২০১৮ সালের নভেম্বরে অভিযান শুরু হলে টেকনাফ থেকে দেশে সয়লাব হয়ে পড়া ইয়াবা এখন কমেছে। এখন সরবরাহের চেইনের পাশাপাশি চাহিদা কমাতে হবে। যশোরের বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে মাদক আসে বরিশালে। সেখানে সরবরাহ চেইন বন্ধ করে দিলে কুড়িগ্রামের রৌমারী দিয়ে ইয়াবা ঢুকছে।
তরুণ কান্তি সরকার বলেন, গণমানুষের কাছে কুফল ও অপরাকারিতা তুলে ধরতে হবে। তাহলে মাদকের ছোবল থেকে রক্ষা পাওয়া এবং শূন্য সহনশীলতায় পৌঁছা যাবে। সে ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে। ধূমপায়ীদের মাধ্যমে মাদকের অপব্যবহার হয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দক্ষিণ কোরিয়ার উপকনস্যুলার কিম সিয়াং সাং এবং সে দেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিচালক এম এস ওন জিয়াল।