পিতৃহীন শিশুদের পাশাপাশি মাতৃহীন শিশুদেরও এতিম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করার সুপারিশ করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। এ জন্য আইনে এতিমের সংজ্ঞায় ‘মাতৃহীন শিশু’ শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে কমিটি।
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি এতিমখানাগুলোতে মানসম্মত সাধারণ শিক্ষা এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার ওপর জোর দিতে বলেছে কমিটি।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে ‘এতিমখানা (সরকারি ও বেসরকারি) এর নিবন্ধন নীতিমালা ও ক্যাপিটেশন গ্রান্ট বরাদ্দ’ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯৪৪ সালের এতিমখানা ও বিধবা সনদ আইন অনুযায়ী, এতিম বলতে ১৮ বছরের কম বয়সী বালক–বালিকাকে বোঝায় যে পিতৃহীন অথবা পিতা–মাতা বা আইনগত অভিভাবক কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, যেসব শিশু পিতৃহীন, তাদের পাশাপাশি মাতৃহীন শিশুদেরও এতিম হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে বলেন, যখন কোনো শিশু মাতৃহীন হয়ে যায়, তখন অনেক ক্ষেত্রে তারা নিগ্রহ বা অবহেলার শিকার হয়। সে জায়গা থেকে তারা মাতৃহীন শিশুদেরও এতিম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করার সুপারিশ করেছেন। তিনি বলেন, সাধারণত এতিমখানাগুলোতে হেফজখানা পরিচালনা করা হয়। কিন্তু নীতিমালায় মানসম্পন্ন সাধারণ প্রাথমিক শিক্ষা বা সমমানের শিক্ষার কথা বলা আছে। কমিটি এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে অনুসরণ এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে জোর দিতে বলেছে।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও অন্য প্রতিবন্ধীদের শ্রুতলেখক নীতিমালা দ্রুত প্রণয়ন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া প্রকৃত চা-শ্রমিকেরা যাতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতাধীন বরাদ্দকৃত ঘরের মালিক হতে পারেন, তা অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুত একটি যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।
রাশেদ খান মেননের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন, বদরুদ্দোজা মো. ফরহাদ হোসেন, সরওয়ার জাহান ও আরমা দত্ত অংশ নেন।