টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু মহাসড়ক। শহর থেকে রেলস্টেশন যেতে গেলে এ সড়ক পার হতে হয়। আগে এই বাইপাস অতিক্রম করতে দুই প্রান্তে সিএনজিচালিতসহ বিভিন্ন যানবাহন দাঁড়িয়ে থাকত। বাইপাসের গাড়ির চাপ কম হলে এরপর সড়ক অতিক্রম করতে হতো। এখন আর সে ঝামেলা নেই। শহর থেকে রেলস্টেশন ও শহরের পূর্বাঞ্চলের এলাকায় যাওয়া যানবাহন নির্বিঘ্নে পার হয়ে যাচ্ছে আন্ডারপাস দিয়ে। এর নাম ঘারিন্দা আন্ডারপাস। আর এ দৃশ্য আজকের।
গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই মহাসড়কের যে দুটি উড়াল সড়ক এবং চারটি আন্ডারপাস উদ্বোধন করেন তার একটি হচ্ছে টাঙ্গাইল শহর বাইপাসের এই ঘারিন্দা আন্ডারপাস।
টাঙ্গাইল শহর বাইপাস সড়কে এই ‘আন্ডারপাস’ স্বস্তি এনেছে হাজারো পথচারীর। এ সড়ক পার হতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হতো। দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে অনেকের। অনেকেই হয়েছে পঙ্গু। এলাকাবাসী আশা করছেন, দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাবেন তাঁরা।
টাঙ্গাইল থেকে কালিহাতীর ছাতিহাটি রুটে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আকবার হোসেন বলছিলেন, ‘আগে বাইপাস পার হতে ভয়ে বুক কাঁপত। এখন আর সে ঝামেলা নেই। নির্বিঘ্নেœচলে যেতে পারি।’
এত দিন নির্মাণাধীন আন্ডারপাসের দুপাশ দিয়ে চলত মহাসড়কের বড় যানবাহন। ফলে ঘটত দুর্ঘটনা। কাল থেকে সব বড় যান চলছে আন্ডারপাসের ওপর দিয়ে।
ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কের টাঙ্গাইল শহর বাইপাস চালু করা হয় ২০০১ সালে। এ বাইপাস সড়কের পশ্চিম থেকেই টাঙ্গাইল পৌর এলাকা শুরু। আর পূর্ব পাশে পড়েছে টাঙ্গাইল রেলওয়ে স্টেশন। টাঙ্গাইল শহর থেকে ট্রেনে যাতায়াত করতে ঝুঁকিপূর্ণ এই বাইপাস পার হতে হতো। এ ছাড়া সদর উপজেলার ঘারিন্দা, কালিহাতী উপজেলার পাইকরা, বল্লা, কোকডহরা ও সহদেবপুর এবং বাসাইল উপজেলার ফুলকি ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন টাঙ্গাইল শহরে যাতায়াত করতে এ বাইপাস অতিক্রম করতে হতো। বাইপাস দিয়ে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী দ্রুতগতির গাড়ি চলাচল করে। এটি অতিক্রম করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত। স্থানীয় লোকজন জানান, বাইপাস চালু হওয়ার পর এই রাস্তা অতিক্রম করতে গিয়ে ঘারিন্দা মোড়ে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ২০ জন। পঙ্গু হয়েছে আরও অনেকে। তাই এলাকার মানুষের দাবি ছিল এখানে আন্ডারপাস নির্মাণের।
মানুষের দাবির মুখে জয়দেবপুর-এলেঙ্গা চার লেন প্রকল্পের আওতায় এখানে আন্ডারপাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
আন্ডারপাস পার হয়ে স্টেশন এলাকায় গিয়ে কথা হয় ট্রেন যাত্রী হামিদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আগে বাইপাস পার হতে অনেক সময় লাগত। সে জন্য নির্ধারিত সময়ে স্টেশনে পৌঁছাতে না পারায় ট্রেন চলে যেত। এখন আর সে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।
সদর উপজেলার ঘারিন্দা ইউনিয়নের সুরুজ গ্রামের হযরত আলী জানান, এই আন্ডারপাস টাঙ্গাইল শহরের সঙ্গে অন্তত ছয়টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করেছে।