ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল নির্ধারণ নিয়ে সংগঠনের নেতৃত্বে থাকা নারীদের প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনও ছিলেন। তবে নেত্রীদের প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিনে পারেননি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠনটির শীর্ষ এই নেতা।
আজ শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগের বিগত কমিটির কেন্দ্রীয় ও হল পর্যায়ের নেত্রীরা মধুর ক্যানটিনের গোলঘরে দীর্ঘক্ষণ কেন্দ্রীয় সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করেন। এ সময় সভাপতির পক্ষ-বিপক্ষের কর্মীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে। সভাপতি নিজেই কর্মীদের শান্ত করতে লাঠি হাতে তেড়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগের একাধিক নেত্রী প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে মধুর ক্যানটিনে কেন্দ্রীয় সভাপতি যাওয়ার পর সংগঠনের নেত্রীরা কেন্দ্রীয় সভাপতির কাছে জানতে চান, মেয়েদের হলগুলোতে ভিপি-জিএস পদে ছাত্রলীগ থেকে কাদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। নতুন কমিটি না হওয়ায় তাঁরা চান, সাবেক কমিটির নেত্রীদেরই এই পদে দেওয়া হোক। নেত্রীরা স্ব-স্ব হল সংসদের প্যানেলে শীর্ষ দুই পদে জায়গা পেতে তাঁর কাছে আশ্বাস চান৷ তাঁরা সভাপতিকে ঘিরে ধরে স্লোগানও দেন। সভাপতি নেত্রীদের নিয়ে গোলঘরে বসেন। সেখানে বাইরে থেকে শোভনের অনুসারী নেতা-কর্মীরা পাল্টা স্লোগান দিচ্ছিলেন। একপর্যায়ে নেত্রীদের সঙ্গে অন্য নেতা-কর্মীদের ধাক্কাধাক্কিও হয়।
নারী নেত্রীরা বলেন, সংগঠনের প্রধান শোভন তাঁদের বলেছেন, হলে যাঁদের জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা আছে, গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোঁজখবর নিচ্ছেন৷ গোয়েন্দা রিপোর্টে যাঁরা জনপ্রিয় হবেন, যাঁরা হলে পরিচিত মুখ, তাঁরাই প্যানেলে থাকবেন৷
ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগের যে প্যানেল হতে যাচ্ছে, সেখানে শীর্ষ তিনটি পদে কেন্দ্রীয় সভাপতি শোভন, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে। কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ যে কমিটি করেছে তারা এই তিনজনের প্যানেলটি চূড়ান্ত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বিষয়টি স্বীকার করলেও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে কেউ বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তাঁরা বলছেন, এ ব্যাপারে তাঁরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাওয়ার আশা করছেন।
জানতে চাইলে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী বলেন, ছাত্রলীগের প্যানেল নির্ধারণে গোয়েন্দা তথ্যই মূল বিবেচনার বিষয়। তিনি বলেন, নারীদের হলে যেহেতু ছাত্রলীগের অবস্থা তুলনামূলক খারাপ এবং তাই হলের শীর্ষ নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। হল কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক হলেই কেউ প্যানেলে জায়গা পাবেন না৷ যাঁরা হলে পরিচিত মুখ, তাঁরাই প্যানেলে থাকবেন৷
আর শীর্ষ তিন পদে প্রার্থী ঠিক হওয়া প্রসঙ্গে সভাপতি বলেন, এ ধরনের একটি খবর তাঁরা শুনেছেন৷ তবে প্যানেলের বিষয়ে তাঁরা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন৷
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীও প্রথম আলোকে বলেন, তিনিও এমন একটি খবর শুনেছেন। তবে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নিজে থেকে এখনো কোনো বার্তা দেননি, সেটি নিশ্চিত করতে পারছেন না।