সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে করা পৃথক ১৫টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে ১১টি মামলায় তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মানহানির অভিযোগসহ মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে মোট ২২টি মামলা আছে। এ নিয়ে রোববার পর্যন্ত ১৯টি মামলার কার্যক্রম স্থগিত হলো এবং ১৬টি মামলায় মইনুল হোসেন জামিন পেয়েছেন।
বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার পৃথক আবেদনের শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দেন। পৃথক মামলা বাতিল চেয়ে ও জামিন চেয়ে মইনুল হোসেন আবেদনগুলো করেন, যার ওপর শুনানি হয়।
আদালতে মইনুল হোসেনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আবদুর রহিম ও এ কে খান উজ্জ্বল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খুরশীদুল আলম।
ওই ১৫টি মামলা কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে জানান আইনজীবী আবদুর রহিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুসারে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ মানহানির মামলা করতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ মাসুদা ভাট্টি নিজে ঢাকায় একটি মামলা করেছেন, তাই অন্যদের করা মামলা চলতে পারে না, এসব যুক্তিতে মামলা বাতিল চেয়ে পৃথক আবেদন করা হয়।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খুরশীদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, মামলা বাতিল চেয়ে মইনুল হোসেনের ১৮টি আবেদন ছিল। এর মধ্যে ১৫টি মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এই ১৫টির মধ্যে ১১টি মামলায় তাঁকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুটি আবেদনের শুনানি মুলতবি (স্ট্যান্ডওভার) রাখা হয়েছে, আরেকটি আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশন চ্যানেলের একটি টক শোতে আলোচনার একপর্যায়ে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে ‘চরিত্রহীন’ বলে মন্তব্য করেন মইনুল হোসেন। তাঁর এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এখন পর্যন্ত ২২টি মামলা হয়েছে। ২০টি মানহানির মামলা এবং অপর ২টি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলা। এর মধ্যে রংপুরে মানহানির অভিযোগে করা এক মামলায় ২২ অক্টোবর রাতে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসা থেকে মইনুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।