‘হঠাৎ করে বিস্ফোরণ হয়। তখন মুহূর্তের জন্য অন্ধকার হয়ে যায় চারদিক। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আগুন লেগে যায়। এরপর ফায়ার সার্ভিস পানি মারলে আগুন নিভে যায়।’
ভয়ংকর এই অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন ফারুক হোসেন (২৫)। গত শুক্রবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাভার্ড ভ্যান নিয়ে ঢুকেছিলেন তিনি। ওই দিন গাড়ি থেকে মালামাল খালাস করতে পারেননি। পরদিন শনিবারও কাজ শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তখনো ফারুক বের হতে পারেননি ডিপো থেকে। এর মধ্যেই আগুন লাগে। তারপর বিকট শব্দে বিস্ফোরণ।
ফারুক বলেন, ‘কীভাবে বের হয়ে যাব, সেই চিন্তা করছিলাম। এর মধ্যে একের পর এক গাড়ি বের হতে থাকে।’ একটু সংবিৎ ফিরে আসার পর ফারুক হোসেন গাড়ি নিয়ে ডিপো থেকে বের হয়ে পড়েন।
ফারুক এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন। স্থানসংকুলান না হওয়ায় তাঁর শয্যা হয়েছে পাশের স্ত্রীরোগ বিভাগে। তাঁর শুশ্রূষায় রয়েছেন বাবা নুর হোসেন। ফারুকের দুই পা এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গেছে। মাঝেমধ্যে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। মাঝেমধ্যে কথা বলছেন।
পাশে থাকা নুর হোসেন বলেন, যে গাড়ি নিয়ে ফারুক বের হয়েছিলেন, সেটির কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে ফারুকের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে।
ফারুকের পাশের শয্যায় রয়েছেন রতন কারণ (৫৪) নামের এক ডিপোশ্রমিক। তিনি ফুয়েল সুপারভাইজার। পাঁচ বছর ধরে বাঁশখালীর জলদী এলাকার এই বাসিন্দা ডিপোতে কাজ করেন। তিনি চোখে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুনঃ
সেদিন রাত আটটা পর্যন্ত রতনের ডিউটি ছিল। ডিউটি শেষ করে পাশে বাসায় গিয়ে খাওয়াদাওয়া করে শুয়ে পড়েছিলেন। এরপর পাগলা ঘণ্টার শব্দ শোনেন। লোকজন হইচই শুরু করে। রতন বলেন, ‘তারপর আমি পড়ে যাই। পরে আর কিছু জানি না। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছি। এখন অনেকটা সুস্থ আছি।’