কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পুলিশের এক সদস্যের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের পর এ ঘটনায় ওসি, পরিদর্শকসহ (তদন্ত) পুলিশের ১৫ সদস্য ও ৫ চিকিৎসককে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
একই ঘটনায় ভৈরবকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভৈরব থেকে কেউ বের হতে পারবে না, কেউ ঢুকতেও পারবে না। একই সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তবিভাগের পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড অবরুদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
পুলিশের ১৫ সদস্য কোয়ারেন্টিনে যাওয়ায় থানার কার্যক্রম পরিচালনায় শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ভৈরব থানায় নতুন করে ৪০ জন যুক্ত করা হয়েছে। তাঁরা ভৈরবের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়মিত পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। এই তথ্য নিশ্চিত করে পরিদর্শক (তদন্ত) বাহালুল আলম খান বলেন, ‘আমরা নিজেদের বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকব। ৪০ জন নতুন সদস্য এসেছেন।’
উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটি সূত্র জানায়, এর আগে ভৈরব থেকে যত নমুনা পাঠানো হয়েছে, সব কটির ফলাফল এসেছে নেগেটিভ। গতকাল বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ থেকে গোপনে তিনটি পরিবারের চারজন সদস্য ভৈরবে আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান নেন। তাঁদের আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়। পুলিশের ওই সদস্য কয়েক দিন ধরে সর্দি–জ্বরে ভুগছিলেন। একই দিন তাঁকেও আইসোলেশন ইউনিটে নেওয়া হয়। ওই দিন পাঁচজনের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা চারজনের শরীরে সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত পুলিশ সদস্য উপপরিদর্শক পদমর্যাদার। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ভৈরবে এটাই প্রথম করোনায় আক্রান্তের ঘটনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি। রাতে তিনি উপজেলার ফেসবুক আইডি থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেন। তাতে ভৈরবকে অবরুদ্ধ ঘোষণার কথা উল্লেখ করা হয়। একই ঘোষণায় হাসপাতালের পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড ছাড়াও আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয়কেও অবরুদ্ধ ঘোষণার কথা বলা হয়। কোয়ারেন্টিনে পাঠানো চিকিৎসকেরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তাও রয়েছেন।
ঘোষণায় উল্লেখ করা হয়, আক্রান্ত ব্যক্তি যে বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন সেটি, যে ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিয়েছেন এবং তাঁর বাসাকে অবরুদ্ধের আওতায় আনা হয়েছে।