বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে এগিয়েছি, কিন্তু লক্ষ্যে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক সেমিনারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে লোকবলের অভাব রয়েছে জানিয়ে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
ক্যাবের ‘জেলা-উপজেলা ভোক্তা প্রতিনিধি সম্মেলন-২০২১ ও ভোক্তা অধিকার শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ রোববার।
সেমিনারে দেওয়া বক্তব্যে টিপু মুনশি বলেন, শুধু অভিযান, জরিমানা ও বাজার মনিটরিং নয়, ভোক্তাদের অধিকার প্রচার করা হলো মূল কাজ। ভোক্তারা যদি জানেন, তাঁদের কী অধিকার, তাহলে তাঁরা সচেতন থাকবেন। তিনি আরও বলেন, দ্রব্যমূল্য স্থির রাখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সার্বক্ষণিক সজাগ রয়েছে। এ জন্য বাজার পরিদর্শনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। মহামারির মধ্যে কাজ করতে গিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ অনেক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই সরকার ব্যবসাবান্ধব। ব্যবসার উন্নতির পাশাপাশি দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, এটা বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
বাজারে প্রতিযোগিতা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করছে। আমরা চাই, একটা স্বচ্ছ প্রতিযোগিতা হবে, যাতে একচেটিয়া ব্যবসা না হয়, ন্যায্যমূল্য থাকে, চাইলেই ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে না নেওয়া যায়। সে জন্য একটা প্রতিযোগিতা থাকতে হবে, যাতে দিনের শেষে ভোক্তারা সুযোগটা পায়। তাতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, ব্যয়ের ক্ষমতাও বাড়বে। করোনা পরিস্থিতিতে ভোক্তার চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল করে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকার বিশাল প্যাকেজ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে। ভোক্তারা যাতে কোনো অসাধু ব্যবসায়ীর হাতে না পড়ে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে এবং একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও প্রয়োজন মেটানোর উদ্দেশ্যে ১৯৯৭ সালে কনজ্যুমারস অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক ডিস্ট্রিবিউশন নামের একটি পৃথক মন্ত্রণালয়ের সৃষ্টি করেছে। ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সমন্বয় করতে একক কোনো মন্ত্রণালয় বাংলাদেশে নেই। এ জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ‘বিজনেস অ্যাফেয়ার্স’ ও ‘কনজ্যুমার অ্যাফেয়ার্স’ নামের দুটি পৃথক বিভাগ তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন গোলাম রহমান।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ মিজানুর রহমান অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় সরকারের কাছে ১৪টি সুপারিশ করা হয়।