চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই পথের ট্রেনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘মিতালী এক্সপ্রেস’। এটি ঢাকার সেনানিবাস স্টেশন থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত চলাচল করবে। তবে উদ্বোধন হলেও ট্রেন এখনই চলবে না। করোনা পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ ভিসা বন্ধ থাকায় ট্রেন পরে চলাচল করবে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ শনিবার শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির শীর্ষ বৈঠকে বেশ কিছু প্রকল্প উদ্বোধন হয়। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী যাত্রীবাহী ট্রেনও ছিল।
রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য রেলের পক্ষ থেকে এক মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে তা পাঠানো হয়েছিল। সেই ভিডিও ক্লিপটির মাধ্যমেই উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
উদ্বোধনী উপলক্ষে রেলের একটি ট্রেন ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ নাম দিয়ে ফুল দিয়ে সাজিয়ে সেনানিবাস স্টেশনে রাখা হয়। দুই প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন ঘোষণার সময় সেনানিবাস স্টেশনেও প্রতীকী উদ্বোধন হয়। এতে রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ভুবন চন্দ্র বিশ্বাসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে সোম ও বৃহস্পতিবার মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাবে। ভারতের জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে রোববার ও বুধবার। ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ছাড়বে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৩০ মিনিটে। একইভাবে ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে, ভারতে পৌঁছাবে সকাল ৭টা ৫ মিনিটে। ট্রেনটি দিনের বেলা ৪৫৬ আসন নিয়ে এবং রাতে ৪০৮ আসন নিয়ে চলাচল করবে।
ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ির দূরত্ব ৫৯৫ কিলোমিটার। এই পথের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এসি চেয়ার ২ হাজার ৭০৫ টাকা, এসি সিট ৩ হাজার ৮০৫ টাকা এবং এসি বার্থ ৪ হাজার ৯০৫ টাকা। এর মধ্যে ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর রয়েছে।
চলাচল শুরু হলে ট্রেনটিতে চিলাহাটি স্টেশন থেকেও যাত্রী ওঠানামা করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে চিলাহাটি থেকে নিউ জলপাইগুড়ির ভাড়া হবে ১ হাজার ২৩৫ টাকা।
রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ট্রেন চলাচলের সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণ ভিসা চালু হলেই ‘মিতালী এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু করবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চিলাহাটি–হলদিবাড়ি পথে ব্রডগেজ রেললাইন। বর্তমানে রেলে ব্রডগেজ ট্রেন চালানোর মতো কোচ নেই। আমদানি করে আনতেও বছর দুয়েক লেগে যাবে। ফলে এই পথে ট্রেন চালানোর সুযোগ নেই। তবে ভারত ১০টি কোচের একটি ব্রডগেজ ট্রেন বিনা পয়সায় দিতে রাজি হয়েছে। ভারতের কোচ দিয়ে এই পথে ট্রেন চলাচল করার কথা ছিল। তবে ভিসা জটিলতায় তা আটকে গেছে।