প্রেমিকার আত্মহত্যার পর প্রতিশোধ নিতে বন্ধুকে খুন করেন ডায়মন্ড
প্রেমিকার আত্মহত্যার পর প্রতিশোধ নিতে বন্ধুকে খুন করেন ডায়মন্ড

ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর প্রেম, প্রেমিকার আত্মহত্যা, বন্ধুকে খুন করে প্রতিশোধ প্রেমিকের

ভিন্ন ধর্মাবলম্বী এক কিশোরী ও তরুণ মো. ডায়মন্ড চাননি তাঁদের সম্পর্কের কথাটা জানাজানি হোক। আর আল আমিনসহ ডায়মন্ডের পরিচিত কয়েক তরুণ চাইছিলেন সম্পর্কটা নষ্ট হোক, সবাই জেনে যাক। একপর্যায়ে কিশোরী আত্মহত্যা করে। সেই মৃত্যুর শোধ নিতে ডায়মন্ড খুন করেন আল আমিনকে।

গতকাল মঙ্গলবার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ডায়মন্ডকে দিনাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ডায়মন্ড এসব তথ্য দেন।

সিআইডির বিশেষ সুপার মুক্তা ধর আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কিশোরীর মৃত্যুর ঘটনায় নওগাঁয় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছিল। আর ডায়মন্ডকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছিলেন আল আমিনের চাচা। ডায়মন্ড পুলিশকে বলেছেন, আল আমিনসহ কয়েক তরুণ ওই কিশোরীকে যৌন হয়রানিও করেছিলেন। এখন অপমৃত্যুর এ মামলা নতুনভাবে তদন্তের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আল আমিনের সঙ্গে আরও যাঁরা ছিলেন, তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

মৃত কিশোরী, ডায়মন্ড, আল আমিন, আল আমিনের বড় ভাই তোফাজ্জল হোসেন—সবাই নওগাঁর মান্দা এলাকার বাসিন্দা। তবে কাজের সূত্রে খুদে ব্যবসায়ী ডায়মন্ড, আল আমিন ও তফাজ্জল ফেনীর পশ্চিম বিজয়সিংহ লুদ্দারপাড় গ্রামের ফরিদ মিয়ার টিনশেড কলোনিতে থাকতেন। দু-এক মাস পরপর নওগাঁয় যেতেন।


পুলিশ জানতে পেরেছে, কিশোরীর সঙ্গে ডায়মন্ডের প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেলে সে বিষপানে আত্মহত্যা করে। পরে কথায় কথায় আল আমিন জানান, তিনি প্রায়ই ডায়মন্ডের ফোন থেকে ওই কিশোরীকে কল করতেন। তিনিই জানিয়েছেন, ডায়মন্ড তাকে আর ভালোবাসেন না। সে কারণে কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

আল আমিন জানান, রুবেল মণ্ডল (২২), হাসিবুর রহমান (২৩), আবু বক্কর (২৩) এবং তিনি কিছুদিন আগে রাতের বেলায় কিশোরীকে যৌন হয়রানিও করেছেন।
এসব খবর জানান পর থেকে আল আমিনকে খুনের পরিকল্পনা করেন ডায়মন্ড। সে অনুযায়ী ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে তিনি আল আমিনের বুকে ছুরি দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকেন। এ সময় আল আমিনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর বড় ভাই তোফাজ্জলকেও ডায়মন্ড ছুরিকাঘাত করেন। আল আমিন মারা যান। তাঁদের চিৎকারে কলোনির অন্য বাসিন্দারা এগিয়ে এলে ডায়মন্ড দৌড়ে পালিয়ে যান।

সিআইডি বলেছে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের খবর প্রচারিত হয়। এরপরই সিআইডির এলআইসি শাখা ছায়াতদন্ত শুরু করে। বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তাঁরা ডায়মন্ডকে দিনাজপুরের হাকিমপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। তিনি জানান, কিশোরীর মৃত্যু ডায়মন্ড মেনে নিতে পারছিলেন না। তাঁর সারা হাতে সিগারেটের ছ্যাঁকার দাগ রয়েছে।