ভাস্কর্য রক্ষার দায়িত্ব দেশের জনগণ, সরকার সবার বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেন, এ দেশের জনগণ অনেক সংস্কৃতিমনা, কোনো দিন কোনো ভাস্কর্য ভাঙেনি। এগুলো ষড়যন্ত্র। তারা চিহ্নিত ষড়যন্ত্রকারী। তাদেরই একটা অপপ্রয়াস। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে যারা নোংরামি করছে, তারা ভুল করছে। ভাস্কর্য নিয়ে এই ভুল–বোঝাবুঝির অবসান শিগগিরই হবে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আসাদুজ্জামান খান।
তিনি বলেন, ‘যারা ভাঙচুর করেছে, তাদের সবাইকে আটক করা হয়েছে। শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নয়, বাঘা যতীনের ভাস্কর্যও ভাঙা হয়েছে। চিহ্নিত করে তাদের নামেও মামলা দেওয়া হয়েছে।’
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ধূপখোলার মাঠে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে গত ১৩ নভেম্বর সমাবেশ করে ‘তৌহিদী জনতা ঐক্যপরিষদ’। এরপর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন। এরপর থেকে চলছে ভাস্কর্যের পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি আলোচনা-সমালোচনা। ভাস্কর্য রক্ষায় বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যেই ৪ ডিসেম্বর গভীর রাতে কুষ্টিয়া শহরে বঙ্গবন্ধুর একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুর হয়। ভাস্কর্য বিরোধিতা ও ভাঙচুরের ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভাস্কর্য হলো ইতিহাসে সংস্কৃতির একটা অংশ। সারা পৃথিবীতে মুসলিম চিন্তাবিদ বা নেতাদের ভাস্কর্য অনেক জায়গায় রয়েছে। মুসলিম তারকাদের ভাস্কর্য রয়েছে। ভাস্কর্য কোনো পূজার জিনিস নয়। স্মৃতি ধরে রাখার জিনিস, হৃদয়ে ধারণ করার জিনিস।’ সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। যারা ভাস্কর্য ভাঙচুরে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেবেন।’
ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান, সহসভাপতি আসলামুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান সভায় উপস্থিত ছিলেন।