রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান জুম্মাপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি তিস্তা নদীর ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। ভাঙন থেকে আর মাত্র ১০ ফুট দূরে স্কুলভবনটির অবস্থান। বর্তমানে বাঁশের খুঁটি পুঁতে সিমেন্টের তৈরি বোল্ডার ফেলে বিদ্যালয়টি রক্ষার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তারপরও ভাঙন থামছে না।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটি পুঁতে সিমেন্টের বোল্ডার ফেলে বিদ্যালয়টি নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার চেষ্টা চলছে। নদী দ্রুত এগিয়ে আসছে স্কুলের দিকে। গত এক সপ্তাহে বেশ কিছু বাঁশের খুঁটি ও বোল্ডার নদীতে ভেসে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল স্কুলে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, একসময় স্কুলটি নদী থেকে অনেক দূরে ছিল। নদীর তলদেশের গভীরতাও ছিল বেশি। এখন নদীতে পলি পড়ে এর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় নদীর ভাঙন আগের থেকে অনেক বেশি হয়। এবার হয়তো বিদ্যালয়টি রক্ষা করা যাবে না—এমন আশঙ্কা করেন তাঁরা।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর এটি ১৯৭২ সালে সরকারি করা হয়। ১৯৯৪ সালে স্কুলটির পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। পাকা দেয়ালের ওপরে চৌচালা টিনের ছাদ। বর্তমান বিদ্যালয়টিতে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছে। স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজন শিক্ষক কর্মরত।
এলাকাবাসী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা জানান, এলাকার সাংসদ ও স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গার উদ্যোগে বিদ্যালয়টি রক্ষার কাজ করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক বদরুল হাসান বলেন, ‘যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা হয়তো সম্ভব হয়ে উঠবে না। এখন শিক্ষার্থীদের ক্লাস ও দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’
আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকাররম হোসেন বলেন, নদীর ভাঙনের মুখে রয়েছে বিদ্যালয়টি। ক্লাস করতে এসে প্রতি মুহূর্তে ঝুঁকির মধ্যে শিশুদের চলাফেরা করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে পাউবো রংপুর কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী তবিবুর রহমান বলেন, নদীর ভাঙন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আবাদি জমিসহ বসতভিটা রক্ষা করতে ইতিমধ্যে নদীর তীর এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কিছু কাজ করা হয়েছে। স্কুলটি রক্ষারও চেষ্টা চলছে।