রংপুরের বদরগঞ্জের জামালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই ভবনের চার কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ছে।
তবু কক্ষের অভাবে ঝুঁকি নিয়ে ওই ভবনে চলছে পাঠদান। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গত ৩ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়টি ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। পাকা ভবন রয়েছে দুটি। ১৯৯৪ সালে নির্মিত ভবনে চারটি ও ২০০৭ সালে নির্মিত ভবনে কক্ষ রয়েছে দুটি। দুই ভবনেই প্রতিদিন পাঠদান চলছে। কিন্তু ১৯৯৪ সালে নির্মিত ভবনের চারদিকে বিভিন্ন স্থানে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কক্ষগুলোর ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। মেরামতের চেষ্টা করেও কোনো ফল হয়নি। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তবু ঝুঁকিপূর্ণ ওই ভবনের তিন কক্ষে শিশুদের পাঠদান করানো হচ্ছে। এক কক্ষে চলছে অফিস কার্যক্রম। এ কারণে যেকোনো মুহূর্তে ওই ভবন ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিষয়টি আগেও একাধিকবার লিখিত এবং মৌখিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে ওই আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফাটল ধরা ভবনের তিনটি কক্ষে শিশু শ্রেণি, প্রথম শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণির ক্লাস চলছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৩ জন। কক্ষ তিনটির ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। সংস্কারের অভাবে কক্ষের পাকা মেঝেতেও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষকদের অফিস কক্ষেরও একই অবস্থা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কয়েকবার ইট বালু ও সিমেন্ট দিয়ে ভবনের ফাটল বন্ধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। ভয়ে আছি কখন ভবনটি ধসে পড়ে।’ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লায়লা আরজুমান বলেন, ‘শ্রেণিকক্ষের ছাদের পলেস্তারা প্রায় সময় খুলে পড়ছে। সম্প্রতি বরগুনার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়লে এক ছাত্রী মারা যায়। এ কারণে আমাদেরও খুব ভয় হচ্ছে। কখন যে ওই রকম দুর্ঘটনা ঘটে এখানে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শায়লা জিয়াছমিন সাঈদ বলেন, সম্প্রতি তিনি এ উপজেলায় যোগদান করেছেন। ওই বিদ্যালয়সহ কয়েকটি জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাশেদুল হক বলেন, আবেদনটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।