বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কয়লা বিক্রি, কাঠ ক্রয়সহ ঠিকাদার মনোনয়ন পদ্ধতিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্তৃপক্ষ কিছু অনিয়মের সত্যতা স্বীকারও করেছে।কয়লাখনির শ্রমিকদের অভিযোগ, নিয়মবহির্ভূতভাবে ছুটির দিনে পছন্দের ঠিকাদারের কাছে কর্তৃপক্ষ রাতে কাঠ নেয়। খনির সিবিএ নেতারা প্রভাব খাটিয়ে ট্রাকপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা নিয়ে অবিক্রিত কয়লা (নতুন কয়লা) ব্যবসায়ীদের দিয়ে দেন। ভূগর্ভে ১১০৫ নম্বর খনি-মুখের কয়লা তোলার জন্য ২ নম্বর সড়ক তৈরির কাজ চলছে। সড়কে কাঠ দিয়ে সাপোর্ট তৈরি করা হয়। এক বছর আগে ঠিকাদারের কাছে নেওয়া কাঠ রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হলেও ওই কাঠ দিয়ে সড়কগুলো তৈরি করা হচ্ছে। এ কারণে অল্প দিনের মধ্যেই কাঠ ভেঙে সড়কগুলো দেবে যাচ্ছে। এতে ভূগর্ভে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকেরা প্রায়ই আহত হচ্ছেন।শ্রমিকেরা জানান, কর্তৃপক্ষের পছন্দের ঠিকাদার সময়মতো কাঠ সরবরাহ করতে পারেনি। এর পরও ওই ঠিকাদারের কাছে গত ৩১ অক্টোবর ছুটির দিন সন্ধ্যায় দুটি কাভার্ড ভ্যানবোঝাই কাঠ বুঝে নেন খনির ভান্ডার সহকারী তোজাম্মেল হক। কাঠ নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে তোজাম্মেল বলেন, ‘খনির সহকারী ব্যবস্থাপক (মাইনিং) দেলোয়ারের নির্দেশে গেট পাস দিয়ে ওই কাঠ বুঝে নিয়েছি।’ এ বিষয়ে খনির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ওই ঠিকাদারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারকে সাত দিন সময় বাড়িয়ে দিয়েছে।নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কুলিশ্রমিক বলেন, ব্যবসায়ীরা সব সময় নতুন কয়লা নিতে চান। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পুরোনো কয়লা ছাড়া নতুন কয়লা দেওয়া যাবে না। খনির সিবিএ সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য নেতারা রাতের বেলা টাকা নিয়ে নতুন কয়লা ব্যবসায়ীদের দেন। অভিযোগ অস্বীকার করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নেতারা কোল ইয়ার্ডে যান না। ইউনিয়নের কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করেন, এ সময় ব্যবসায়ীরা খুশি হয়ে ২০-৩০ টাকা দেন।কয়লাখনির মহাব্যবস্থাপক (মাইনিং) মীর আব্দুল মতিন কিছু অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করেন। বলেন, মাঝেমধ্যে ভূগর্ভে জরুরি ভিত্তিতে কাঠের প্রয়োজন হয়। উত্পাদনের স্বার্থে এ সময় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ঠিকাদার মনোনীত করে বন্ধের দিনেও কাঠ নিতে হয়।