ছুটির দিন কিংবা অবসরে গতবাঁধা রুটিন থেকে মন একটু বিনোদন চাইতেই পারে। কাছে কোথাও, ঝঞ্ঝাট ছাড়াই ঘুরে চটজলদি আসা যায়-এমন জায়গায় যেতে চাইলে উত্তরা কিন্তু মন্দ নয়। এখানে শিশুদের জন্য আছে দুটি বিনোদনকেন্দ্র, একটি পারিবারিক বিনোদনকেন্দ্র, বেশ কয়েকটি সেক্টর পার্ক ও অবারিত কাশের প্রান্তর। ইদার্নীং অনেকেই বন্ধুদের দল নিয়ে ঘুরতে আসছেন এসব স্থানে। কেউ কেউ বেরিয়ে পড়ছেন পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে।
পুরো উত্তরাজুড়ে আছে আটটি মনোরম সেক্টর পার্ক। লোহার রেলিং ঘেরা পার্কগুলোয় আছে চমৎকার বসার জায়গা। পরিচ্ছন্ন চারিধার। সারি-সারি গাছ, প্রাণবন্ত সবুজের সন্নিবেশ। খেলার মাঠ। দোলনা ও সুইপিং স্ট্যান্ডসহ আছে নানা রকম শিশু বিনোদন উপকরণ। কোথাও কোথাও আছে ব্যয়ামের সরঞ্জাম। পার্কগুলো পাবেন উত্তরার ৩, ৪, ৬,৭, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে। এ ছাড়া উত্তরার ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে আছে ছায়াঘন লেকপাড়। ভোর ও বিকালের বিভিন্ন সময়ে লেকপাড়ে বেড়াতে আসেন অনেকে। এমন একজন উত্তরার বাসিন্দা সুফিয়া আক্তার বলেন, ‘প্রায়ই আসি। জায়গাটা বেশ গোছানো। আমার ছেলে খুব মজা পাচ্ছে। ওকে নিয়ে ঘুরছি। সন্ধার আগেই চলে যাব।’
পার্কগুলো সপ্তাহের প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা এবং বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বিশেষ দিনগুলোতে পার্ক পরিদর্শনের সময় বাড়ে। তবে, ৭ নম্বর সেক্টর পার্কটি খোলা থাকে সারাদিনই। নিয়ম মেনেই প্রচুর দর্শনার্থী আসেন।
রাজধানীর উত্তরায় ৫ নম্বর সেক্টরের লেক ড্রাইভ এবং ১ /বি সড়কে ফানপার্ক ও ইলেকট্রোফান নামে আছে দুটি শিশু বিনোদনকেন্দ্র। শিশু-কিশোরদের সমাগম প্রচুর। মঙ্গলবার বাদে সপ্তাহের অন্য ছয় দিনই খোলা থাকে বিনোদনকেন্দ্র দুটি। আসতে হবে দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে। তবে, ইলেকট্রোফান সারাদিনই খোলা থাকে।
উত্তরা তৃতীয় পকল্প সংযোগ সড়কে ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড নামে আছে আরেকটি পারিবারিক বিনোদনকেন্দ্র। প্রায় নয় বিঘা জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা এই বিনোদনকেন্দ্রটি বেশ চোখধাঁধানো। এখানে আছে ২৩টি রাইড। রেস্তোরা, দর্শণার্থীদের গাড়ি রাখার ব্যবস্থা, বাহারি বসার জায়গা, নিবিড় নিরাপত্তা ও তারহীন ইন্টারনেট সংযোগ। মা ও শিশুর নিরাপত্তার জন্য রয়েছে আরও কিছু বিশেষ ব্যবস্থা।
সন্ধ্যায় এখানকার পরিবেশ রঙিন আলোয় ঝলমল করে ওঠে। সপ্তাহজুড়েই বেলা ১১টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। জনপ্রতি টিকেট ২ শত টাকা।
কাশফুলের মাতাল সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে আসতে হবে ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়িতে। এখানকার দিগন্তজোড়া কাশফুলে চোখ রেখে নিতে পারেন হালকা খাবারের স্বাদ। হাতের কাছেই মিলবে আইসক্রিম, চা, কফি, চটপটি, ফুচকা, কাবাবসহ নানা পদের খাবার। দেখা গেছে এখানে, যারা বেড়াতে আসেন তাদের বেশি ভাগই তরুণ। বাড়তি আনন্দের জন্য দিয়াবাড়িতে আছে প্যাডেল বোট। চাইলেই নেমে পড়তে পারবেন লেকের জলে। নাগরদোলা আর ঘোড়ায় চড়ার সুযোগও জুটে যাবে।