এবারের শীত মৌসুমে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এখন বসন্তকাল। বসন্ত শেষ হতে এখনো বাকি প্রায় এক মাস। এরই মধ্যে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। অনেক দিন ধরে বৃষ্টির দেখা নেই। দেশের প্রায় অর্ধেক অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহও। ফলে মানুষের কাছে গরম অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কিছুটা স্বস্তির জন্য ভেজা তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে রেখেছেন কারওয়ান বাজারের আনারস বিক্রেতা আফজাল হোসেন। আজ রোববার বেলা আড়াইটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘অসহ্য গরম। টিকতে না পেরে মাথায় ভেজা তোয়ালে দিয়ে রেখেছি। ১৫ দিন হবে এই গরম বেড়েছে। গরমে আমার আনারস বিক্রি বেড়েছে।’
গরমে বেড়েছে আনারস ও ডাবের চাহিদা। এতে বিক্রি বেড়েছে দোকানিদের। দুপুরে কারওয়ান বাজারের ডাব বিক্রেতা মো. আলী হোসেন বলেন, ‘ফাল্গুন মাস থেকে গরম বেড়েছে। এতে বেড়েছে ডাব বিক্রি। আগে দিনে ১০০ ডাব বিক্রি করতাম, এখন ২০০ করি।’
এদিকে আজ সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাঙামাটি, চাঁদপুর, ফেনী, সিলেট, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, পটুয়াখালী জেলাসহ রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিন তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, অন্যান্য বছর এ সময় কয়েক দিন পরপর হালকা বৃষ্টি হয়। এবার সে রকমও হচ্ছে না। যেহেতু অনেক দিন ধরে বৃষ্টি নেই, তাই তাপমাত্রা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে গেছে।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বৃষ্টি হওয়ায় এবং মার্চে কোনো বৃষ্টি না থাকায় চলতি বছরকে অস্বাভাবিক বলছেন বজলুর রশিদ। এই আবহাওয়াবিদ বলেন, পশ্চিমা বাতাস থাকায় আবহাওয়া এখনো শুষ্ক। বৃষ্টি হওয়ার জন্য আর্দ্র বাতাসের প্রয়োজন। দখিনা বাতাস থাকলে বঙ্গোপসাগর থেকে আসা বাতাসে আর্দ্রতা থাকে এবং বৃষ্টি হয়।
আর্দ্র বাতাস নিয়ে আশার কথা শোনালেন বজলুর রশিদ। তিনি বলেন, যেহেতু সাগরে একটি নিম্নচাপ আছে, এটা উপকূলের কাছাকাছি এলে বাতাসের ধরন পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারপর দেখা যাবে, মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে।
নিম্নচাপটি উপকূল পর্যন্ত আসতে আরও দুই–তিন দিন লাগতে পারে। বজলুর রশিদ বলেন, এটি বাংলাদেশের দিকে আসার সম্ভাবনা কম, মিয়ানমারের দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।