বিজ্ঞান গবেষণা

বিসিএসআইআর এখন ‘সাদা হাতি’

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের উদ্ভাবিত পণ্য বাজার পায় না। যদিও বছরে তাদের ব্যয় ২৫৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) গত ১০ বছরে এমন কোনো উদ্ভাবনা নেই, যা ভালো সাড়া ফেলেছে। তবে এ সময়ে তাদের ব্যয় বেড়ে চার গুণ হয়েছে। শুধু বিগত এক দশক নয়, প্রতিষ্ঠার পর সাড়ে ছয় দশকেও তারা গবেষণা ও উদ্ভাবনে বড় কোনো সাফল্য দেখাতে পারেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বিসিএসআইআরের কাছে লিখিতভাবে জানতে চাওয়া হয়েছিল, প্রতিষ্ঠার পর এ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে সফল ১০টি পণ্য বা পণ্য তৈরির প্রক্রিয়া কী। যদিও তাদের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তালিকা পাওয়া যায়নি।

সংস্থাটির প্রচারপত্র ও কর্মকর্তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে তাদের ১০টি বড় উদ্ভাবন বা উদ্ভাবিত পণ্যের তালিকা দাঁড়ায় এ রকম; জ্বালানিসাশ্রয়ী সেচপাম্প, পরিবেশবান্ধব চাতাল বয়লার, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, উন্নত চুলা, জুতার ইনসোল বোর্ড, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জুতার ফুটবেড, পরিপূরক খাদ্য বা স্পিরুলিনা ট্যাবলেট, রোগ পরীক্ষায় ব্যবহৃত আলট্রাসাউন্ড জেল, সবজির কীটনাশক দূর করার ভেজিটেবল ওয়াশ ও যানবাহনের লুব্রিক্যান্ট।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই তালিকার আটটি পণ্য বাজারেই নেই। কোভিড–১৯–এর অতিমারির পরে ভেজিটেবল ওয়াশের বিক্রি মোটামুটি বেড়েছে; আর লুব্রিক্যান্ট বাজারে আছে, তবে বিক্রি কম। সর্বশেষ বিসিএসআইআর ২০১৯-২০ অর্থবছরে সাতটি নতুন পণ্য বা প্রসেস উদ্ভাবন করেছে। এগুলোর একটিও কেউ ইজারা নেয়নি।

বিজ্ঞান গবেষণা ও উদ্ভাবনে এই পরিস্থিতি দেশের সরকারি সবচেয়ে বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠানের, যার লক্ষ্য ‘বিজ্ঞান গবেষণা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন’। বিসিএসআইআরের ওয়েবসাইটে ‘ভিশন’ বা রূপকল্প হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, এটিকে গবেষণা ও উদ্ভাবনে ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে।

৬৫ বছরে লক্ষ্য কতটুকু পূরণ হলো, জানতে চাইলে বিসিএসআইআরের চেয়ারম্যান মো. আফতাব আলী শেখ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই যে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হচ্ছে; এটা তো বিরাট অর্জন।’ এরপর বলেন, ‘আমি খুব কম সময় হলো এখানে এসেছি। এখানে নানা অসংগতি আছে। এগুলো দূর করার চেষ্টা করছি।’ বিজ্ঞানীদের গবেষণার কাজে নানাভাবে আরও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, বিজ্ঞানীরা যাতে গবেষণা বাদে অন্যান্য কাজে কম মনোযোগ দেন, সে জন্য প্রতিনিয়ত ‘কাউন্সেলিং’ দেওয়া হচ্ছে।

বিশাল কলেবর, বিপুল ব্যয়

১৯৫৫ সালে তদানীন্তন পিসিএসআইআরের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘পূর্বাঞ্চলীয় গবেষণাগার’ নামে বিসিএসআইআরের যাত্রা শুরু। ১৯৭৩ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রত্যাশা ছিল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক মৌলিক ও ফলিত গবেষণা পরিচালনা করা। নমুনা বিশ্লেষণ, শিল্পের প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, গবেষণা কর্মসূচি ও প্রকল্পে অনুদান এবং গবেষণায় ফেলোশিপ দেওয়ার কাজও করে সংস্থাটি।

বিসিএসআইআরের প্রধান কার্যালয় ঢাকার মিরপুর রোডে, যেখানে জমির পরিমাণ ২৮ একরের কিছু বেশি। চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে তাদের আলাদা কার্যালয় রয়েছে। সংস্থাটির অধীনে রয়েছে ১২টি ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্র। বিসিএসআইআরের হিসাবে, ১ হাজার ৬৮৯টি পদের বিপরীতে তাদের জনবল রয়েছে ৯৬৪ জন। তাঁদের মধ্যে ২৮৬ জন বিজ্ঞানী এবং ৬৭৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত আছেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ওই অর্থবছরে বিসিএসআইআরের বাজেট ব্যয় ছিল ২৫৪ কোটি টাকা। ১০ বছর আগের তুলনায় তা প্রায় চার গুণ। ব্যয়ের বড় অংশ জনগণের করের টাকা থেকে জোগান দেয় সরকার। সংস্থাটি নিজস্ব আয়ও আছে। যেমন ২০১৯-২০ অর্থবছরে পণ্য ইজারা দিয়ে ও নমুনা বিশ্লেষণ করে আয় করেছে ৫৫ কোটি টাকা। এ আয়ও কমছে। তিন বছর আগেও একই খাত থেকে সংস্থাটির আয় ছিল ৭০ কোটি টাকা।

উদ্ভাবিত পণ্য বা প্রসেস ইজারা দিয়ে আয় অবশ্য সামান্য। বিসিএসআইআর জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে ২০২০-এর ২ ডিসেম্বর—এই তিন বছরে তারা পণ্য ও প্রসেস ইজারা দিয়ে সাড়ে ২৭ লাখ টাকার মতো আয় করেছে।

ব্যবসায়ীদের সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান প্রথম আলোকে বলেন, বিজ্ঞান গবেষণায় বিসিএসআইআর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগটি ভালো ছিল। কিন্তু বছরের পর বছর এত টাকা খরচ করে ফলাফল তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। বিসিএসআইআর একটি সাদা হাতিতে পরিণত হয়েছে।

উল্লেখ্য, শ্বেত হস্তী বা সাদা হাতি বাগধারাটির অর্থ হলো, কোনো কিছুর পেছনে বিপুল ব্যয় করে ফলাফল তেমন একটা না পাওয়া।

‘সেরা’ উদ্ভাবনের অবস্থা করুণ

বিসিএসআইআরের বিজ্ঞানীরা পণ্য তৈরির প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। উদ্ভাবিত এসব প্রক্রিয়া বছরে ৬০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে ইজারা নিয়ে পণ্য তৈরি করে বাজারে ছাড়েন ব্যবসায়ীরা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, ৬৫ বছরে তাদের উদ্ভাবিত পণ্য বা প্রক্রিয়ার সংখ্যা ১ হাজার ৮। এগুলোর মধ্যে ৪৭৬টি ইজারা নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ১১৭টি পণ্য বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সংস্থাটির উন্নয়ন বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আসলে এই ১১৭টি পণ্যের বড়জোর দু–একটি বাজারে থেকে থাকতে পারে।

বিসিএসআইআরের কর্মকর্তারা জনপ্রিয় পণ্যের তালিকায় রাখেন স্পিরুলিনা ট্যাবলেটকে। ইউরেকা ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০০২ সাল থেকে পণ্যটি ইজারা নিয়ে বাজারজাত করছে। এর ব্যবস্থাপক সৌদি ইমাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০০৭ সাল পর্যন্ত স্পিরুলিনা মোটামুটি চলত। এরপর আর চলছে না।’ তিনি জানান, সবচেয়ে ভালো সময়ে তাঁরা মাসে ৬০ হাজার ট্যাবলেট বিক্রি করতে পেরেছেন, তবে এখন আড়াই হাজার বিক্রি হয়। ওষুধ প্রশাসনের অনুমোদন না থাকায় এটি বিক্রিতে সমস্যার মুখে পড়তে হয় দোকানদারদের।

২০১৬ সালে বিসিএসআইআর থেকে লুব্রিক্যান্ট গ্রিজ তৈরির প্রক্রিয়া ইজারা নেয় যশোরের ফোকাস লুব্রিক্যান্ট। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার তপন কুমার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে বিদেশি লুব্রিক্যান্ট গ্রিজ অনেক কম দামে পাওয়া যায়। বিসিএসআইআরের প্রযুক্তিতে উৎপাদন খরচ বেশি, বিক্রিও কম হয়। পণ্যের মানও তেমন ভালো হয় না।

বিসিএসআইআর জানিয়েছে, তাদের আরেক ‘জনপ্রিয় উদ্ভাবন’ বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপিত হয়েছে ৭ হাজার ৮০০টি। এ ছাড়া ২৮ হাজার উন্নত চুলা বিতরণ করেছে তারা। সংস্থাটির জ্বালানি গবেষণা ও উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. শাহ জামাল বলেন, বিদেশি অর্থায়নে ২০১১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পটি চলেছে। এরপর আর কেউ বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট ও উন্নত চুলার প্রযুক্তি ইজারা নেয়নি।

বিসিএসআইআরের জনসংযোগ বিভাগ ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য অর্জনের একটি প্রচারপত্র সরবরাহ করে। এতে মাছ ও দুধে ফরমালিনের উপস্থিতি শনাক্তকরণ কিট, লবণে আয়োডিন শনাক্তকরণ কিট, জ্বালানিসাশ্রয়ী সেচপাম্প, পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানিসাশ্রয়ী চাতাল বয়লার, জুতার ইনসোল বোর্ড ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জুতার ফুটবেডকে রাখা হয় অর্জনের তালিকায়। কিন্তু গত মাস পর্যন্ত এসব পণ্যের ইজারা কেউ নেয়নি।

সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা নিজেরা ফরমালিন শনাক্তকরণ কিট তৈরি করে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে বিক্রি করতে পেরেছে ১২৫টি। আয়োডিন কিট এখন আর বিক্রি হয় না।

বিসিএসআইআরের নথিপত্র অনুযায়ী, সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা ২০১৯-২০ অর্থবছরে যে সাতটি নতুন পণ্য বা প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন, তা হলো বিদ্যুৎসাশ্রয়ী মাইক্রোকন্ট্রোলারভিত্তিক স্মার্ট লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম, মাশরুম মিক্সড স্যুপ পাউডার, বেটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ কুমড়া বিস্কুট ও গাজরের বিস্কুট, পেয়ারা বাইট (পেস্ট্রি), অ্যালুমিনিয়াম বর্জ্য থেকে শুষ্ক অ্যালুমিনিয়াম সালফেট এবং পানিতে দ্রবণীয় চর্বিযুক্ত এজেন্ট উৎপাদন। এগুলোর একটিও ইজারা কেউ নেয়নি। ফলে বাণিজ্যিকভাবে বাজারে আসেনি।

বিসিএসআইআরের গবেষণা সমন্বয়কারী হেমায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। যারা ইজারা নেয়, তাদের সক্ষমতা বেশি থাকে না। তারা ব্র্যান্ডিং করতে পারে না। উৎপাদন খরচ অনেক সময় বেশি পড়ে। ফলে বিসিএসআইআরের পণ্যগুলো বাজারে টিকতে পারে না।

করোনায় তৎপরতা

দেশে করোনা পরিস্থিতিতে বিসিএসআইআরের জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিন–নকশা (জিনোম সিকোয়েন্স) বের করে আলোচনায় এসেছেন। তাঁরা গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত করোনাভাইরাসের ২৮০টি পূর্ণাঙ্গ জিন–নকশা বের করেছেন। এগুলো করোনাভাইরাসের ওষুধ তৈরির আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি) ও যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনলিক্যাল ইনফরমেশনে (এনসিবিআই) প্রকাশিত হয়েছে।

বিসিএসআইআর ১৩ জানুয়ারি করোনাভাইরাস নিয়ে গবেষণার অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সম্মেলনের কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের ডেকে নেয়। অনুষ্ঠানের ব্যানারে লেখা ছিল ‘বিসিএসআইআরের জিনোমিক রিসার্চ ল্যাবরেটরির গবেষণার অগ্রগতি ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি’। তবে সেখানে তুলে ধরা হয় বার্তা সংস্থা সিএনএনের ফিলিপাইন থেকে প্রকাশিত একটি সংবাদ। করোনার নমুনা বিশ্লেষণে অগ্রগতি নিয়ে এই সংবাদে বাংলাদেশের নাম ছিল। এ ছাড়া জার্মানির গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) একজন মুখপাত্রের হোয়াটসঅ্যাপ প্রশংসাবার্তার কথা তুলে ধরা হয়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বিসিএসআইআরের কোনো উল্লেখ ছিল না। বাংলাদেশে আরও নয়টি প্রতিষ্ঠান করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে।

১১ মাসে দর্শনার্থী ৩ জন

বিসিএসআইআরের পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়কেন্দ্র ছিল ঢাকার মিরপুর রোডে সংস্থাটির মূল কার্যালয়ে। ২০১৬ সালের দিকে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। পরিত্যক্ত এই কেন্দ্রে পরীক্ষাগার বা বিক্রয়কেন্দ্র করার পরিকল্পনা চলছে।

বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা পণ্যের প্রদর্শনীর জন্য বিসিএসআইআর প্রাঙ্গণে ২০১৭ সালের ৩১ জুলাই ঘটা করে উদ্বোধন করা হয় উদ্ভাবনা বা ইনোভেশন গ্যালারির। ছুটির দিন ছাড়া অন্য দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত গ্যালারিটি খোলা থাকে। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তেঁতুলের জুস, ক্যারোটিনসমৃদ্ধ নুডলস, হারবাল হ্যান্ডওয়াশ, নানা পদের হেলথ ড্রিংকস, ভেজিটেবল ঘি, পেঁপের জেলি ইত্যাদি পণ্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

ইনোভেশন গ্যালারির নিবন্ধন বই ঘেঁটে দেখা গেল, ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে এই প্রতিবেদক ছাড়া মাত্র তিনজন দর্শনার্থী সেখানে গিয়েছিলেন।

সার্বিকভাবে বিসিএসআইআরের উদ্ভাবন ও অর্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিসিএসআইআরের পণ্যগুলো জনপ্রিয় হয়নি। সেই অর্থে এগুলো বড় কোনো উদ্ভাবন নয়। তবে প্রায়োগিক দিক থেকে বাজারে এগুলো আরও জনপ্রিয় করা যেত। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে বিসিএসআইআরের বাজেট বড় হয়েছে। কিন্তু ফল পেতে আরও সময় অপেক্ষা করতে হবে। যাঁরা বিজ্ঞানী, তাঁদের মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, তাঁরা যে টাকায় গবেষণা করছেন, সেটি ফেরত দেওয়ার ভাবনা থাকতে হবে।

এ কে আজাদ চৌধুরী উল্লেখ করেন, দেশের উদ্ভাবনগুলো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি ও পরিবেশ—কোনোটাই নেই। তৃতীয় বিশ্বের সব দেশেই অবশ্য একই অবস্থা। ভারতে উদ্ভাবনকে বেশ উৎসাহিত করা হয়।