বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রীর মৃত্যু, জবানবন্দি দিয়েছেন প্রধান আসামি

রাজধানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আসামির নাম মর্তুজা রায়হান চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার ওই আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এ ছাড়া একই মামলায় গ্রেপ্তার নিহত ছাত্রীর বান্ধবী ফারজানা জামান নেহার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আদালত–সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ মামলায় গ্রেপ্তার অপর আসামি নুহাত আলম তাফসীরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হতে পারে।

গত বৃহস্পতিবার সাফায়েত জামিল নামের এক শিক্ষার্থী আদালতে আত্মসমর্পণ করে বলেন, তিনিই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি। তিনি মামলার আসামি হতে চান। তাঁকে এই মামলায় যেন গ্রেপ্তার দেখানো হয়। শুনানি নিয়ে আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এ মামলার এজাহারে নাম থাকা আরাফাত নামের আসামি মারা গেছেন।

রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৩১ জানুয়ারি মোহাম্মদপুর থানায় মামলা হয়। সেই মামলায় চারজন আসামির নাম উল্লেখ করে মামলা করেন নিহত ছাত্রীর বাবা। পাঁচ নম্বর আসামির তালিকায় একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে ওই ছাত্রীর বাবা দাবি করেন, গত ২৮ জানুয়ারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী (বাদীর মেয়ে) মিরপুর থেকে লালমাটিয়ায় তাঁর বন্ধু আরাফাতের কাছে আসেন। এরপর আসামি মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও আরাফাত ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে উত্তরায় একটি রেস্টুরেন্টে যান। আগে থেকে ওই রেস্টুরেন্টে অবস্থান করা ওই শিক্ষার্থীর বান্ধবী নেহা ও অজ্ঞাত একজন ব্যক্তিসহ অন্য আসামিরা ওই শিক্ষার্থীকে অধিক মাত্রায় মদ পান করান। তখন ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখান থেকে মোহাম্মদপুরে নুহাত আলম তাফসীরের বাসায় আসেন। সেখানে আসামি মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ওই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন। পরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে ওই শিক্ষার্থীকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।

অবশ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, অজ্ঞাত বিষক্রিয়ার কারণে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়।

আর ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলছেন, ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি।

মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফ গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মামলার অপর আসামি আরাফাত মারা গেছেন। বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়েছে।