বিধিমালায় বিশেষ বিধানে বিয়ের সংখ্যার তথ্য রাখার বিষয়ে জোর দেওয়া হলেও মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে তা আমলে নেওয়া হচ্ছে না।
২০১৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ ধারায় আদালতের মাধ্যমে অপ্রাপ্তবয়স্কের ‘সর্বোচ্চ স্বার্থে’ দেশে এ পর্যন্ত কটি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে, সে তথ্য নেই সরকারের কাছে। আইনটি বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলছেন, ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে উপজেলা ও জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা যে ছক পূরণ করে অধিদপ্তরে তথ্য পাঠান, তাতে আইনের বিশেষ বিধানে বিয়ের বিষয়টি উল্লেখ নেই। অথচ ২০১৮ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিধিমালায় যে ফরম বা ছকের উল্লেখ আছে, তাতে বিশেষ বিধানকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের নিচে কোনো মেয়ে এবং ২১ বছরের নিচে কোনো ছেলের বিয়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবে ১৯ ধারায় ‘বিশেষ ক্ষেত্রে’, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ বা ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের ‘সর্বোত্তম স্বার্থ’ বিবেচনায় আদালতের নির্দেশে বিয়ে হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না। অর্থাৎ এই আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে বিবাহ হলে এই আইনের অধীন অপরাধ বলে গণ্য হবে না।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের নারী ও শিশু নির্যাতন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসংক্রান্ত ফোকাল পয়েন্ট উপপরিচালক মো. আবুল কাশেম (পরিবীক্ষণ, সমন্বয় ও সচেতনতা সৃষ্টি) প্রথম আলোকে বলেন, অধিদপ্তরের কাছে বিশেষ ধারায় কতটি বিয়ে হয়েছে, সে–সংক্রান্ত সার্বিক কোনো তথ্য নেই। কেননা জেলা, উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায় থেকে বাল্যবিবাহ–সংক্রান্ত যে তথ্য পাঠানো হচ্ছে, সেই ছকে বিশেষ ধারায় বিয়ের কথা উল্লেখ করা নেই। কর্মকর্তারা যে ছকে তথ্য পাঠাচ্ছেন, তাতে কতটি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা হয়েছে এবং বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পাওয়া শিশুর ঠিকানার তথ্য দিতে বলা হয়েছে।
অথচ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালার যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, তাতে যে ছক আছে সেখানে আইনের বিশেষ ধারায় কতটি বিয়ে সম্পন্ন হলো বা আদালত বিয়ের অনুমতি দিলেন না, সে তথ্য দেওয়ার কথা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জেলা কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির মাসিক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য ছকে জেলা/উপজেলা বা ইউনিয়নের নাম, বাল্যবিবাহের তথ্য প্রাপ্তির সংখ্যা, আইন অনুযায়ী বাল্যবিবাহ দেবেন না—এ ধরনের প্রদত্ত মুচলেকার সংখ্যা, বাল্যবিবাহ বন্ধের সংখ্যা, বিশেষ বিধানের অধীন প্রাপ্ত আবেদনের সংখ্যা, এ ধারায় অনুমতিপ্রাপ্ত বিবাহের সংখ্যা, অন্য কোনো সিদ্ধান্ত হলে তার সংখ্যা, বিশেষ প্রেক্ষাপটের বিবরণসহ বিভিন্ন তথ্য পাঠানোর কথা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে জাতীয় কমিটি, জেলা কমিটি, উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি এবং ‘অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থ যাচাই কমিটি’ কাজ করছে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের জেলা ও উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ ধারায় অনেক বেশি বিয়ের ঘটনা না ঘটলেও বিয়ে হচ্ছে। তবে যেহেতু তথ্য সংরক্ষণের বাধ্যবাধকতা নেই, তাই তাঁরা বিষয়টিতে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ ছাড়া আদালত কতটি বিয়ের অনুমতি দিচ্ছেন, সে তথ্যও তাঁদের কাছে আসছে না। অনেক সময় যাচাই কমিটির সূত্রে ঘটনা তদন্তের নির্দেশ পেলে তদন্ত করে সে প্রতিবেদন জমা দেন আদালতের কাছে। এর বাইরে এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য পান না।
কিছুটা সুন্দরী হয়ে থাকলে এবং বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে থাকলে মেয়েটির নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তা না করে আদালতই নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বিয়ের বৈধতা দিলেন, যা গ্রহণযোগ্য মনে হয় না।রাশেদা কে চৌধূরী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
আইনটি প্রণয়নের সময় নারী ও মানবাধিকারকর্মীরা এ বিশেষ ধারাকে আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং শিশুর মানবাধিকারের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করে দেশব্যাপী আন্দোলন, মানববন্ধন, সভা-সেমিনার করেন। তবে সব আপত্তিকে পাশ কাটিয়ে সরকার বিশেষ ধারা বহাল রেখেই জাতীয় সংসদে আইনটি পাস করে ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। এখন এ বিশেষ ধারার কতটুকু অপপ্রয়োগ হলো বা হচ্ছে, তা জানার কোনো উপায় নেই। কেননা আইন ও বিধিমালা প্রণয়নের পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে মোট কতটি বিয়ে হয়েছে বা বিয়ের অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে, সে তথ্যই কারও কাছে নেই। অর্থাৎ এখন আর এ ধারা নিয়ে তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই কারও।
বিশেষ ধারায় বিয়ে হচ্ছে বা অভিভাবকেরা আদালতের শরণাপন্ন হচ্ছেন বলেই জানালেন বর্তমানে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো.নাজমুল আলম (রাজস্ব)। তিনি ২০১৯ সাল থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নাজমুল আলম টেলিফোনে প্রথম আলোকে জানান, ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধানে চারটি মামলা পেয়েছিলেন। এর মধ্যে দুটিতে তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। আর দুটিতে আদালত বিয়ের অনুমতি দিয়ে আদেশনামা বাস্তবায়ন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালায় শর্ত হিসেবে আবেদিত বিবাহটি জোরপূর্বক সংঘটিত হলে, ধর্ষণ, অপহরণ, জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি কারণে সংঘটিত হলে, এবং এসব কারণে মামলা বিচারাধীন থাকলে যাচাই কমিটি বিয়েটি সম্পন্ন না করার জন্য আদালতে মতামত দেবে। এরপরও আদালত অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোচ্চ স্বার্থ বিবেচনায় বিয়ের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
সিলেটের একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানালেন, ছেলে–মেয়ে পালিয়ে যাওয়ায় মেয়ের বাবা মেয়ের বিয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে তদন্তে গিয়ে ছেলে–মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একজন আরেকজনের ওপর দায় চাপায়। আর মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে, তেমনও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই যাচাই কমিটি এ বিয়ে হওয়া অনুচিত বলে মতামত দিয়েছিল আদালতে।
আদালত বিশেষ ধারায় বিয়ের অনুমতি দিয়েছেন এমন একটি আদেশনামা এই প্রতিবেদকের কাছে আছে। এ নথি বলছে, ‘মেয়েটি প্রবাসী পরিবারের “কিছুটা সুন্দরী” হওয়ায় স্থানীয় বখাটে যুবক ছেলেরা তাকে উত্ত্যক্ত করে। বিভিন্ন সময় তাকে অপহরণ করে বিয়ে করবে বলেও হুমকি দেয়। এ কারণে অনেকটা বাধ্য হয়ে এ বিয়ের আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। ২০১৭ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ ধারা পর্যালোচনা করে আইনত ও ন্যায়ত এ বিয়ে সম্পাদনের নির্দেশ দেওয়াই সমীচীন বলে আদালতের কাছে প্রতীয়মান মনে হয়েছে। তাই দরখাস্তকারীকে তাঁর মেয়ের বিয়ে সম্পাদনের অনুমতি দেওয়া হলো।’ গত বছরের নভেম্বর মাসে ঢাকার বাইরের এক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১৫ বছর ১০ মাস ১৮ দিন বয়সী মেয়ে, যে কি না কিছুটা সুন্দরী হওয়ায় তার বিয়ের অনুমতি দেন। বিয়েতে সংশ্লিষ্ট থানা, পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, প্রশাসক, পৌরসভার চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করেন, সে জন্য সেসব দপ্তরে আদালতের আদেশের কপি পাঠাতে বলা হয়েছে।
*১৯ ধারায় উল্লেখ রয়েছে, ‘বিশেষ ক্ষেত্রে’, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক’ বা ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো মেয়ের ‘সর্বোত্তম স্বার্থ’ বিবেচনায় আদালতের নির্দেশে বিয়ে হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। * আইনে বিশেষ বিধান যুক্ত করার সময় এর প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছিলেন দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। কিন্তু আইন পাস ও বিধিমালা জারির পর বেশির ভাগই আর উচ্চবাচ্য করেননি। * ‘মেয়ে কিছুটা সুন্দরী’, এ কারণেও ঢাকার বাইরে এক আদালত ১৫ বছর ১০ মাস ১৮ দিন বয়সী মেয়ের বাল্যবিবাহের অনুমতি দিয়েছেন।
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী প্রথম আলোকে বলেন, কিছুটা সুন্দরী হয়ে থাকলে এবং বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে থাকলে মেয়েটির নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। তা না করে আদালতই নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বিয়ের বৈধতা দিলেন, যা গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। রাষ্ট্র একজন নাগরিককে কতটুকু নিরাপত্তা দিতে পারছে—এ ঘটনায় তা–ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এতে মেয়েটিরও মর্যাদাহানি হয়েছে। রাষ্ট্র, প্রশাসনের দায় এড়ানোর নজিরও বলা যায় এ ঘটনাকে।
মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের কাছে বিশেষ ধারায় বিয়ের কোনো পরিসংখ্যান না থাকা প্রসঙ্গে রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে অভিভাবক মন্ত্রণালয় হিসেবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও তার অধীনের সংস্থা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর কতটুকু দায়িত্ব পালন করছে—এ ঘটনা থেকে তারও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ মন্ত্রণালয় মাঠপর্যায়ে কর্মরত সরকারি সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে কি না, সে প্রশ্নও সামনে এসেছে।
গত বছরের অক্টোবরে টাঙ্গাইলের ১৪ বছরের কিশোরী নূর নাহারের বিয়ের ৩৪ দিনের মাথায় মৃত্যু বাল্যবিবাহের পরিণতি সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। নূর নাহারের বিয়ে হয়েছিল প্রবাসফেরত ৩৫ বছর বয়সী রাজীব খানের সঙ্গে। স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ফলে বিয়ের পর থেকেই রক্তক্ষরণ হতে থাকে। নূর নাহারের বাবা রিকশাচালক নুরু মিয়া মেয়েকে স্থানীয় ক্লিনিক, কুমুদিনী হাসপাতাল এবং সবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়েছিলেন। ২৪ অক্টোবর মারা যায় এ কিশোরী। গত বছরের ১ নভেম্বর টাঙ্গাইলের বাসাইল থানায় মামলা করেন নুরু মিয়া।
মামলার আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে বর্তমানে জামিনে আছেন।
সম্প্রতি নূরু নাহারের মা বুলবুলি বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ছোট বয়সে মেয়ের বিয়ে দিয়ে ভুল করছি। লাভের লাভ কিছুই হইল না, মাঝখান থেকে মেয়েটাই তো মরে গেল।’
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক মালেকা বানু প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই সর্বনিম্ন বা একটি বয়সসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন এই সর্বনিম্ন বয়স থেকেও কম বয়সে কারও বিয়ে হলে বিশেষ করে মেয়েশিশুর বিয়ে হলে তার শারীরিক ও মানসিক যে ক্ষতি হবে, তার দায় কে নেবে? বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ ধারা বাতিলের পক্ষে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের বিশেষ বিধান প্রশ্নে রুল দেন হাইকোর্ট। রুলে আইনের ১৯ ধারার বিশেষ বিধান কেন সংবিধানের সঙ্গে বৈষম্যমূলক ও সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, শিশু অধিকারসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার ও দেশের আইনের সঙ্গে এই বিধান অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে কেন ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল দেন। আইনের ১৯ ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৪ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি ও নারীপক্ষের পক্ষে রিট আবেদনটি করা হয়েছিল। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।
মামলার পিটিশনার বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ
আইনে এ বিশেষ ধারা বড় একটি ক্ষত বা বলতে গেলে এ ধারা পুরো আইনের চেতনাই নষ্ট করে দিয়েছে। তাই সরকারকে এ বিশেষ ধারা বাতিল করতেই হবে। রিট মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় আছে বলে জানান তিনি।