বিলম্বের গ্যাঁড়াকলে ট্রেন, লালমনি স্পেশাল বাতিল

এবার ট্রেনে ঈদযাত্রা যেন দুর্ভোগের আরেক নাম। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঠিক হয়নি আজ রোববারও। দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পথে ট্রেন চলাচলে বিলম্ব চলছেই। এর মধ্যে বাতিল করা হয়েছে লালমণি ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি।

রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেসের ছাড়ার কথা ছিল গতকাল শনিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে। ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার সম্ভাব্য সময় জানানো হয়েছে আজ রোববার বেলা ১১টা। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস আজ সকাল ছয়টার ছাড়ার কথা ছিল। ট্রেনটি ছাড়ার সম্ভাব্য কোনো সময় জানানো হয়নি। শুধু বলা হয়েছে দেরি হবে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস আজ সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও সম্ভাব্য সময় জানানো হয়েছে বেলা ১টা ৪০ মিনিট। চিলাহাটিগামী সকাল আটটার নীলসাগর এক্সপ্রেস ছাড়ার সম্ভাব্য কোনো সময় জানানো হয়নি, বলা হয়েছে বিলম্ব হবে। রংপুর এক্সপ্রেস সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টার দিকে তা ছাড়তে পারে।

শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পথে ট্রেন দেরিতে ছাড়ছে। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা। কমলাপুর স্টেশন, ঢাকা, ১১ আগস্ট। ছবি: হারুণ আল রশীদ

সকাল সোয়া নয়টার লালমণি ঈদ স্পেশাল ট্রেনটি বাতিল হয়ে গেছে। যাত্রীদের টিকিট ফেরত দিতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে ধূমকেতু এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, পদ্মা এক্সপ্রেস, নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী টিকিট ফেরত দিয়েছেন।

উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম দেরিতে ছাড়ছে ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস। সকাল ১০টার একতা এক্সপ্রেস ১০টা ২৫ মিনিটের দিকে ছাড়তে পারে। সকাল ১০টা ২৫ মিনিটের কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ও সকাল সাড়ে ১১টার ঈশা খাঁ এক্সপ্রেস শিডিউল অনুযায়ী চলছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্রবেশমুখে বেশ কয়েকজন রেলওয়ে কর্মকর্তা দাঁড়িয়ে আছেন বিশেষ টিকিট নিয়ে। তাঁরা কিছুক্ষণের মধ্যে যেসব ট্রেন ছেড়ে যাবে, সেগুলোর স্ট্যান্ডিং টিকিট দিচ্ছেন। কাউন্টারে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে টিকিট কিনতে গেলে ট্রেন ধরতে না পারার আশঙ্কা থেকেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ের কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আমিনুল হক সকাল থেকে দপ্তরে নেই। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

অগ্রিম টিকিটে ট্রেনে ঈদযাত্রা শুরু হয়েছে গত বুধবার থেকে। প্রথম দিন থেকেই উত্তরের পথে কিছু ট্রেন দেরিতে চলেছে। গত শুক্রবার টাঙ্গাইলে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হওয়ায় ওই পথ ধরে চলা সব ট্রেনের সূচিই এলোমেলো হয়ে পড়ে।

ঢাকা থেকে পঞ্চগড়গামী সকাল ১০টার একতা এক্সপ্রেস ১২টা ৪০ মিনিটে কমলাপুরে এসে পৌঁছেছে। মৌমাছির ঝাঁকের মতো ট্রেনটিকে ঘিরে ফেলেছে ঘরমুখী মানুষ। ছবি: হারুণ আল রশীদ

যাত্রীদের দুরবস্থা
দুই ভাইবোন উম্মে হাবিবা ও আওরঙ্গজেব পদ্মা এক্সপ্রেসের যাত্রী। গতকাল রাতের ট্রেনটি আজ বেলা ১১টার দিকে ছাড়বে এমন খবর পেয়ে সকালে স্টেশনে আসে তারা। ১১ টার একটু আগে তারা জানতে পেরেছে, পদ্মা এক্সপ্রেস গাজীপুর ছেড়ে আসছে। বহুল আকাঙ্ক্ষিত ট্রেনে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুই ভাইবোন। এবার হয়তো ঘরে ফেরার প্রতীক্ষা শেষ হবে তাদের।

ভোর ছয়টার রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছাড়ার সম্ভাব্য কোনো সময় জানানো হয়নি। এই ট্রেনের যাত্রী আতিকা ইকবাল জানালেন, সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী ধূমকেতু এক্সপ্রেস এখনো রাজশাহী থেকে ছাড়েনি। কখন ছাড়বে, তারও কোনো ঠিক নেই। অনিশ্চিত যাত্রার দুশ্চিন্তা মাথায় নিয়ে স্বামীর সঙ্গে স্টেশনে বসে আছেন তিনি।