ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটেছে, তার সুফল পেতে হলে বিদেশে পাচার করা টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে। অন্যথায় এর সুফল পাওয়া যাবে না। পাশাপাশি অর্থ পাচারকারীদের সম্পদ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করার দাবি তোলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ‘লুটেরাদের বিরুদ্ধে আমরা’ ব্যানারে বিভিন্ন বামপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতা ও শ্রমিকনেতারা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ ও মানববন্ধন করে এ দাবি জানান। সমাবেশ শেষে তাঁরা বিভিন্ন দাবি–সংবলিত স্মারকলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দপ্তরে পেশ করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাহেরা বেগম জলি।
এ সময় স্মারকলিপি পাঠ করেন শ্রমিকনেতা আবদুল্লাহ আল ক্বাফী। এতে বলা হয়, গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় ব্যাংক খাতে সীমাহীন লুটপাট চালানো হয়েছে। কয়েকটি বড় ব্যবসায়ী গ্রুপ এই লুটপাটের জন্য দায়ী। অবিলম্বে খেলাপি ঋণসহ ব্যাংক খাতে লুটপাট হওয়া সব অর্থ উদ্ধার করতে হবে। এই লুটেরাদের সম্পত্তি বিক্রি করে ঋণ শোধ করার এখতিয়ার বাংলাদেশ ব্যাংকের রয়েছে। সেই ক্ষমতাবলে অবিলম্বে তাদের সম্পত্তি বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে। শীর্ষস্থানীয় ঋণখেলাপি, তাদের ঋণের পরিমাণ ও ব্যাংক থেকে লুটপাটের পরিমাণ তালিকাবদ্ধ করে জনসাধারণের অবগতির জন্য তা প্রকাশ করতে হবে। একই সঙ্গে বিদেশে পাচার করা সব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেড় দশকের বেশি সময় ধরে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ছিল। ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর দেশে নতুন গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশি ও পোশাকশ্রমিকেরা শ্রমঘামে যে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছেন, লুটেরা ধনিক শ্রেণি গত ১৫ বছরে তা বিদেশে পাচার করেছে। গণমাধ্যমে এসেছে বাংলাদেশ থেকে ১২ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। দেশের অর্থনীতির অভিভাবক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাচার হওয়া এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
এ সময় রাগিব আহসান, হারুন উর রশিদ, সাজ্জাদ জহির ও জমশেদ আনোয়ারসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিমুখে একটি পদযাত্রা করা হয়। গভর্নর কার্যালয়ে না থাকায় তাঁর দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।