আজ বাঙালির বিজয়ের দিন। এই দিনে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভিড় করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কেউ এসেছেন পরিবারের সঙ্গে, কেউ রাজনৈতিক দলের ব্যানারে। তবে করোনা মহামারির কারণে এবার অন্য বছরের তুলনায় ভিড় কিছুটা কম।
আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান। এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানান তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আহমদ চৌধুরী। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সামরিক কায়দায় শহীদদের প্রতি সালাম জানায়।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে স্মৃতিসৌধ এলাকায় ভিড়ও বাড়তে থাকে। সকাল সোয়া নয়টার দিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান এই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বড় রাজনৈতিক দলের ব্যানারে আসা নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে স্মৃতিসৌধ এলাকায় মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ভিড় কিছুটা কমে আসে। ব্যক্তি উদ্যোগে বা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেকেই আসতে থাকেন স্মৃতিসৌধে। সকাল নয়টার দিকে ভিড় তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল। করোনার স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে খানিকটা শৈথিল্য দেখা গেছে।
বেলা ১১টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, গণফোরাম, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটি, রেড ক্রিসেন্ট বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে দেখা গেছে।
এদিকে বাঙালির উৎসব ও আনন্দের এই দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের চারপাশেও ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ফেরি করে বিক্রি করতে দেখা গেছে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ও লাল-সবুজ রঙের উত্তরীয়। কেউ কেউ লাল-সবুজ রঙের মাস্ক পরেও হাজির হয়েছেন স্মৃতিসৌধ এলাকায়।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে স্ত্রী, দুই শিশুসন্তানসহ সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে এসেছেন আকতার হোসেন। তাঁদের সবার মুখেই মাস্ক ছিল। ছুটির দিনে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পাশাপাশি শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো এবং শিশুসন্তানদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ধারণা দিতেই তাঁরা সপরিবারে স্মৃতিসৌধ এলাকায় এসেছেন।