নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতা আবদুল মতিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। গতকাল বিকেলে চর এলাহী বাজারে
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে বিএনপি নেতা আবদুল মতিন হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন। গতকাল বিকেলে চর এলাহী বাজারে

বিএনপি নেতা তোতার খুনিদের গ্রেপ্তারে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মতিন তোতার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। গতকাল সোমবার বিকেলে চর এলাহী বাজারে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে ওই আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

সমাবেশে বক্তব্য দেন চর এলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের, যুবদলের আহ্বায়ক মো. ইব্রাহীম তোতা ও মামলার বাদী ইসমাইল তোতা। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, চর এলাহী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ইসমাইল হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন, বর্তমান ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, চর এলাহী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক ও চর এলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের যোগসাজশে বিএনপি নেতা আবদুল মতিনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ কোনো আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আবদুল মতিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা না হলে তাঁরা কোম্পানীগঞ্জ থানা ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেন।

অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সঙ্গে আবদুল মতিনের কোনো বিরোধ ছিল না। সরকার পরিবর্তনের পর মতিনের ছেলেরা দলবল নিয়ে তাঁর ভাই ও ভগ্নিপতির বাড়িতে হামলা চালিয়েছেন। তাঁর ইজারা নেওয়া চর ল্যাংটা ঘাট দখল করেছে মতিনের লোকজন। তা ছাড়া মতিনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাঁকে ওই মামলায় জড়ানো হয়েছে।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে চর এলাহী বাজারে দলীয় প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন বিএনপি নেতা আবদুল মতিন। চর এলাহী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাকের যোগসাজশে ওই হামলা হয় বলে মতিনের ছেলে ইসমাইল হোসেন অভিযোগ করেন। ঘটনার পর গুরুতর আহত মতিনকে প্রথমে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে, পরে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩০ আগস্ট বিকেলে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ছেলে ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মামলার কোনো আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি নেতা আবদুল মতিনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে চর এলাহী বাজারে সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ প্রতিবাদ কর্মসূচি চলে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেতা আবদুল মতিন হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিরা সবাই গা ঢাকা দিয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে। অভিযুক্তরা বারবার অবস্থান পরিবর্তন করায় কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।