এইচ টি ইমাম বললেন

বিএনপি গেরিলা কায়দায় কেন্দ্র দখলের হুমকি দিয়েছে

এইচ টি ইমাম
এইচ টি ইমাম

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, তারেক রহমানের বক্তৃতায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্টের ও সন্ত্রাস সৃষ্টির পরিকল্পনা-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি সংঘবদ্ধভাবে গেরিলা কায়দায় ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকিও দিয়েছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র করছে তারা।

আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত মিডিয়া সেল-এ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এইচ টি ইমাম এ মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনের আগে স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মিডিয়া সেল-এর সদস্যসচিব কাশেম হুমায়ুন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেন, দুর্নীতির দায়ে ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নাশকতার নির্দেশ দিয়েছেন। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের অর্থায়নে ব্যাপক সহিংসতা ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে ভোটারদের মধ্যে ভীতি ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে সহিংসতা অনেক কম হয়েছে। যেসব সহিংসতার ঘটনার ঘটনা ঘটেছে, সেসবের শিকার শুধুই আওয়ামী লীগের কর্মীরা। নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াত ভয়াবহ সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে। বিএনপি-জামায়াত ভুয়া ব্যালট-বুথ সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া ভিডিও ছড়াতে পারে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। এ সময় গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কীভাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ড. কামাল হোসেন ভোটকেন্দ্র দখলের নির্দেশনা দিয়েছেন।’

বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নোয়াখালীতে কিছু আলামত জব্দ করেছে পুলিশ প্রশাসন। সেখানে বিএনপির প্রার্থী মওদুদ আহমদ নির্বাচনের দিন নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আগাম অভিযোগপত্র প্রিন্ট করেও রেখেছেন। তিনি বলেন, আগামীকালের নির্বাচন শুধু আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার জন্য নয়, গোটা বাঙালি জাতি ও গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কালকের ভোট দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।

এইচ টি ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে গত এক দশকে আওয়ামী লীগ সরকার যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। বিএনপির শাসনামলে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ছিল। এখন নির্বাচন কমিশন আইন, নির্বাহী ও বিচার ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান। কমিশনের আর্থিক, প্রশাসনিক ও অন্যান্য বিষয়ে কমিশন সরকারের মুখাপেক্ষী নয়। বর্তমান ব্যবস্থা আরও সক্রিয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নয়টি প্রতিষ্ঠানের ৬ হাজারের বেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিষয়টি আরপিওর লঙ্ঘন। বিএনপি-জামায়াতের পর্যবেক্ষকেরা নিজেদের রাজনীতির স্বার্থে প্রতিবেদন প্রকাশ করে নির্বাচনের ফল প্রভাবিত করতে পারে।

সংবাদ সম্মেলনে এইচ টি ইমাম দলের আহত নেতা-কর্মীদের ছবি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। নির্বাচনী সহিংসতায় আওয়ামী লীগের ক্ষতিগ্রস্ত নেতা-কর্মীর সংখ্যা তুলে ধরে এইচ টি ইমাম বলেন, ডিসেম্বর মাসজুড়ে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের সাতজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৪৬১ জন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। আওয়ামী লীগের ১৮৯টি কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। ৫৮টি স্থানে বোমা হামলা ও গুলি করা হয়েছে। ৯৩টি স্থানে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পাঁচটি জায়গায় পুলিশের ওপর হামলা করা হয়েছে এবং ঠাকুরগাঁওয়ে একটি স্থানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপি প্রতিদিন তিনবার করে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচার করে। বিএনপি মিথ্যাচার ও ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর মেশিন। তারা যেসব সংখ্যা দিয়েছে, এসব ভুয়া। তিনি আরও বলেন, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালে অগ্নি–সন্ত্রাসের কারণে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল। তখন থেকে ওই নেতা-কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ সে সময়ের নাশকতা মামলার আসামিদের ধরলেও বিএনপি বলে নির্বাচনের কারণে তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।